কবিচন্দ্রপুরে কোনও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে সময়ে পৌঁছতে পারে না পুলিশ। থানা রয়েছে ৮ কিলোমিটার দূরে, রামপুরহাটে। অথচ খবর পেয়েও হাত কামড়ে বসে থাকতে হয় মাত্র এক কিলোমিটার দূরে থাকা তারাপীঠ থানাকে। কারণ, তারাপীঠ ফাঁড়ি থেকে থানা হলেও কবিচন্দ্রপুরের মতো স্থানীয় খরুণ পঞ্চায়েতের বহু এলাকা আজও রামপুরহাট থানার আওতায়।
খরুণ পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকাকে ঘিরে তৈরি হওয়া এই জটিলতা দূর করতে এগিয়ে এল জেলা প্রশাসন। জেলা পুলিশকে দ্বারকা নদের দুই পাড়কেই তারাপীঠ থানার আওতায় আনার প্রস্তাব দিলেন প্রশাসনের কর্তারা। সোমবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তথা তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের সিইও উমাশঙ্কর এস বলেন, ‘‘জটিলতায় থাকা ওই সব এলাকাগুলিকে তারাপীঠ থানার আওতায় আনতে সম্প্রতি জেলা শাসকের কাছে একটি প্রস্তাব দেন এসডিও (রামপুরহাট)। তা অনুমোদনের জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়। ওই অনুমোদন মেলার পরে তা স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে পাঠানো হবে।’’ এর ফলে প্রশাসনিক স্তরে কাজ চালাতে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সুবিধা হবে বলেই তাঁর মত।
বর্তমানে তারাপীঠ থানার আওতায় সাহাপুর ও বুধিগ্রাম পঞ্চায়েত আছে। তারাপীঠের মধ্যে দিয়ে যাওয়া দ্বারকা নদের পশ্চিমপাড় রামপুরহাট থানার আওতায় এবং পূর্বপাড় তারাপীঠ থানার আওতায় রয়েছে। পশ্চিমপাড়ে তারাপীঠকে কেন্দ্র করে ৬৫টিরও বেশি ছোটবড় লজ আছে। সেগুলির সব লজ মালিকেরা এলাকার সব থেকে কাছে থাকা তারাপীঠ থানার আওতায় আসতে চেয়ে দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ওই লজ মালিকদের একাংশের বক্তব্য, এলাকায় কোনও ঘটনা ঘটলে কাছে থাকা তারাপীঠ থানাই বেশি কার্যকর হতে পারে। কারণ, রামপুরহাট থানা থেকে পুলিশের এতটা আসতে সময় লাগে। আবার কিছু ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে তারাপীঠ থানার পুলিশ এলাকায় এলেও কার্যত আইনি দিক থেকে তারা কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে রামপুহাট থানারই মুখাপেক্ষী থাকতে হয়।
প্রশাসনের প্রস্তাবের কথা শুনে স্বভাবত খুশি তারাপীঠের ওই অংশের লজ মালিকেরা। লজ মালিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, লজ ম্যানেজার সুনীল গিরিরা বলছেন, ‘‘উত্তম প্রস্তাব। এতে শুধু আমরাই নই, এলাকার মানুষও উপকৃত হবেন।’’ দু’জনেরই দাবি, এই পদক্ষেপে তারাপীঠে আসা দর্শনার্থীরা সুবিধা পাবেন। পুলিশ-প্রশাসনেরও অনেক সুবিধা হবে। এসপি নীলকান্ত সুধীর কুমার অবশ্য জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।