নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে অবাধেই উঠছে বালি, দেখল প্রশাসন

বাঁকুড়ায় আপাতত বন্ধ বালি পরিবহণ

নদী থেকে বালি তোলা বন্ধের নির্দেশের পরেও সার দিয়ে বালি বোঝাই ট্রাক চলাচল করছিল। হঠাৎ পরিদর্শনে নেমে বুধবার জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা এমনই বেশ কিছু বালির গাড়ি আটক করার পরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বাঁকুড়া জেলায় বালির গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০১:১০
Share:

বমাল: বিষ্ণুপুরে দ্বারকেশ্বর নদের ধারে ভাটরা গ্রামে আটক করা ট্রাক এবং যন্ত্র। বুধবার ভোরে। ছবি: শুভ্র মিত্র

নদী থেকে বালি তোলা বন্ধের নির্দেশের পরেও সার দিয়ে বালি বোঝাই ট্রাক চলাচল করছিল। হঠাৎ পরিদর্শনে নেমে বুধবার জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা এমনই বেশ কিছু বালির গাড়ি আটক করার পরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বাঁকুড়া জেলায় বালির গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। তিনি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিক ও পুলিশকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, মজুত করে রাখা বালি পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলায় পরিবহণ করা যাবে না।

Advertisement

বস্তুত, বাঁকুড়া জেলায় ১৭ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নদী থেকে বালি তোলায় নিষেধাজ্ঞা আগেই জারি করা হয়েছিল। শুধু মাত্র মজুত করা বালিই পরিবহণ করা হবে বলে জানানো হয়। ফি বছর বর্ষার সময়ে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অবৈধ বালি পাচার যে রোখা যাচ্ছিল না, তা বার বার প্রশাসন বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্ন ভাবে অভিযান চালিয়ে জানতে পারে। নদী ঘাট লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারাও অভিযোগ তোলেন, নিষেধ সত্ত্বেও নদী থেকেই বালি তোলা চলছে। যদিও বালি পরিবহণে যুক্ত লোকজনের দাবি, মজুত করা বালিই তাঁরা পাঠাচ্ছিলেন। কিন্তু, প্রশাসনের দাবি, তাঁদের দাবির সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।

এ বার তাই অবৈধ বালির কারবার বন্ধে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন আরও কড়া মনোভাব নিচ্ছে। শুধু বালির গাড়ি চলাচলে বেড়িই পড়ানো হচ্ছে না, কোন ঘাট মালিক মজুত বালি কোথায়, কত পাঠাচ্ছেন, যানবাহনের নম্বর-সহ সেই তথ্যও নজরবন্দি করতে বিশেষ ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

জেলাশাসক বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘ঘাট মালিকদের কাছে কত বালি মজুত রয়েছে, তার হিসাব আমরা সংগ্রহ করব। তাই কয়েক দিনের জন্য বালির পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী দিনে কোন ঘাট মালিক, কোথায় কত পরিমাণ বালি পাঠাচ্ছেন, সেই তথ্য জানাতে বিশেষ ফোন নম্বর চালু করা হচ্ছে।’’

জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ঘাট মালিকদের নদী থেকে বালি তোলা বন্ধের সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ বালি মজুত করতে অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রেই মজুত বালির পরিমাণে গরমিল পাওয়া যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বেনিয়ম হচ্ছে কি, না তা জানতে এই বিশেষ পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

ঘটনা হল, বালি তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকেই খোলা বাজারে বালির দাম অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এই সময়ে যাঁরা ঘরবাড়ি তৈরি করছেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। জেলা প্রশাসন বালি পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তাঁরা ফাঁপরে পড়ে গিয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা, এ বার ইমারতি দ্রব্য সরবরাহকারীরা বালির দাম আরও বাড়িয়ে দেবে। জেলাশাসকের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘খুব শীঘ্রই মজুত বালি তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তারপরেই মজুত বালি পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন