Kurmi Agitation

আদালত বেআইনি বলতেই ‘রেল রোকো’ আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা কুড়মিদের, পরের ঘোষণা ৩০ সেপ্টেম্বর

কুড়মি নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা বরাবর শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে। রেলের একটি পাথরেরও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু রাজ্য সরকার ‘যুদ্ধ-যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৫
Share:

কুড়মিদের ‘রেল রোকো’ আন্দোলন। —ফাইল চিত্র।

আবার এক দফা রেল এবং সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছিল কুড়মিরা। কিন্তু মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট এই আন্দোলনকে ‘বেআইনি’ ঘোষণা করতেই আন্দোলের পথ থেকে সরে এলেন তাঁরা। বুধবার থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি এবং পুরুলিয়ার কুস্তাউরে যে রেল এবং সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছিল, তা আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে বলে জানালেন কুড়মি নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো।

Advertisement

কুড়মিদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবিতে আগে একাধিক বার আন্দোলনের পথে গিয়েছে কুড়মি সম্প্রদায়। এই অবরোধের জেরে দূরপাল্লা এবং লোকাল ট্রেন বাতিল হয়েছে। সড়কপথেও যাতায়াত করতে পারেননি যাত্রীরা। বুধবার আবার আন্দোলন ঘোষণা হওয়ার পর, এ নিয়ে মামলা হয় হাই কোর্টে। মঙ্গলবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ এই কর্মসূচিকে বেআইনি ঘোষণা করে। অবরোধ মোকাবিলায় প্রয়োজনে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার কথা বলে আদালত।

বস্তুত, কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে বুধবার ৭১টি ট্রেন বাতিল করার কথা জানায় দক্ষিণ-পূর্ব রেল। পাঁচটি ট্রেন ঘুরপথে চালানোর কথা জানানো হয়। কিন্তু পুজোর মুখে রেল এবং রাজ্য সড়ক অবরোধের জেরে সাধারণ মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবেন। এই অভিযোগে সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন ‘পুরুলিয়া চেম্বার অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এ নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সাধারণ মানুষের সমস্যা করে দিনের পর দিন এ ভাবে গণপরিবহণ আটকে রাখা যায় না। এই কর্মসূচি জনস্বার্থ বিরোধী। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। কিন্তু এ ভাবে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির মুখে ফেলতে পারেন না। এই কর্মসূচি মোকাবিলায় রাজ্যকে আগে থেকে বাহিনী প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।

Advertisement

এই প্রেক্ষিতে কুড়মি নেতা অজিত বলেন, ‘‘বুধবার থেকে ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে কুড়মি আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই আন্দোলন আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পুলিশি অত্যাচার, পুলিশি সন্ত্রাস, জায়গায় জায়গায় আমাদের নেতাদের ধরপাকড়, থানায় থানায় কর্মীদের আটক করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা আদিবাসী কুড়মি সমাজ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আন্দোলন প্রত্যাহার করার।’’ কুড়মি নেতার দাবি, তাঁদের আন্দোলন বরাবরই শান্তিপূর্ণ থেকেছে। রেলের একটি পাথরেরও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু রাজ্য সরকার ‘যুদ্ধ-যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে। জাতিসত্তার এই লড়াই শান্তিপূর্ণ ভাবে করতে চান কুড়মিরা। তাই অশান্তির পথে যাবেন না তাঁরা। ৩০ সেপ্টেম্বর মানবাজারে আলোচনার পর এ নিয়ে পরবর্তী ঘোষণা হবে বলে জানান কুড়মি নেতা অজিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন