সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে পুরুলিয়া জেলায় স্থগিত থাকা পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতগুলিতে বোর্ড গঠনে তৎপরতা শুরু হয়েছে তৃণমূলে।
শাসকদলের দাবি, স্থগিত থাকা ১৩টি পঞ্চায়েত ও একটি পঞ্চায়েত সমিতির বেশির ভাগই তারা বোর্ড তৈরি করবে। ঘটনা হল, বলরামপুর, আড়শা ও পাড়া ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতে বোর্ড তৈরির মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই শাসকদলের। বাকি দশটি পঞ্চায়েতে অবশ্য বোর্ড তৈরিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না তৃণমূলকে। একই ভাবে কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের বোর্ড তৈরি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের যে ভিত্তিহীন অভিযোগ বিজেপি-সহ বিরোধীরা তুলেছিল, সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে। ফলে জেলায় ঝুলে থাকা পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠনে আর কোনও সমস্যা থাকছে না। আমরা বেশিরভাগ জায়গাতেই বোর্ড গঠন করব। সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই দলের তরফে প্রস্তুতি শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
তবে কবে এই তেরোটি পঞ্চায়েত ও একটি সমিতিতে বোর্ড তৈরি হবে, সে ব্যাপারে এ দিনই বিশদে কিছু জানাতে পারেনি জেলা প্রশাসন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘যে সব পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখতে বলা হয়েছিল, সেখানে কী হবে, সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা হাতে আসেনি। নির্দেশ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সন্ত্রাসের কারণে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন করতে পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। তবে, প্রশাসন জানাচ্ছে, এই জেলার ১৭০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৫৭টিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বোর্ড গঠন সম্পন্ন হচ্ছে। জেলার ২০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে এক মাত্র কাশীপুর বাদ দিয়ে সর্বত্রই বোর্ড গঠন হয়ে যাচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই। কাশীপুর ব্লকের সাতটি-সহ রঘুনাথপুর ১, পাড়া, সাঁতুড়ি, বলরামপুর, আড়শা, নিতুড়িয়া ব্লকের ছ’টি পঞ্চায়েতে কোথাও একটি বা কোথাও একাধিক আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ছাড়া আর কেউ মনোনয়ন দেয়নি। ফলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলায় এত দিন ওই পঞ্চায়েতগুলিতে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়েছিল। একই ভাবে কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির পাঁচটি আসনে নির্বাচন না হওয়ায় সেখানেও বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়েছিল।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২১ অগস্ট রাজ্য সরকার নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছিল, পঞ্চায়েতেগুলিতে বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতিতে এসডিও-রা দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনা-সহ সেগুলির আর্থিক আয়-ব্যয়ের কাজ, একশো দিনের প্রকল্পের দেখভাল করবেন। প্রয়োজনে বিডিও বা এসডিও কোনও আধিকারিককে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত বা সমিতির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে এখন কী করা হবে, সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।