সামনে হাতি। আর তা দেখে ভিমরি খেয়ে উল্টে পড়লেন বন দফতরের কর্মী। শুধু তাই নয়, হাতির হামলায় জখম হলেন তিন জন গ্রামবাসীও। কোথাও আবার দু’-একটি ঘরের চালাও ভাঙা পড়ে। এ ভাবেই বুধ ও বৃহস্পতিবার তিনটি হাতির একটি দল তাণ্ডব চালাল বর্ধমান ও বীরভূমের গ্রামে।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বীরভূমের ভীমগড় থেকে অজয় পেরিয়ে হাতির দলটি বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের রামনগর মানায় পৌঁছয়। বিকেল চারটে নাগাদ খেতে কাজ করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল মণ্ডল। আচমকা হাতির দলটি জঙ্গল বেরিয়ে আসে। একটি হাতি সুশীলবাবুকে লাথি মারে। আশেপাশের এলাকা থেকে লোক জন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। কিছুক্ষণ পরে এলাকায় পৌঁছন ব্লক আধিকারিক, বন দফতর ও পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ কর্মীরা।
বেশ কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত হাতির দলটির দেখা না মিললেও বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ফের একটি হাতির দেখা মেলে পাণ্ডবেশ্বর গ্রামে নীচুপাড়ার পুকুরপাড়ে। সেখানে পুকুরে স্নান করতে নামছিলেন ছিদাম রুইদাস নামে এক জন। তাঁকেও লাথি মারে হাতি। এর পরেই হাতিটি লাগোয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তবে ছিদামবাবুর চোট গুরুতর নয়। বাড়িতেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।
খানিক বাদে ফের ওই এলাকাতেই কানাই ঘোষাল নামে এক বছর বাইশের যুবককে শুঁড়ে তুলে পুকুরের জলে ছুড়ে মারে ওই হাতিটিই। তিনি কোনও রকমে সাঁতরে অন্য পাড়ে চলে যান। বন দফতরের কর্মীরা এলাকায় পৌঁছন। তার পরে কৃষ্ণ পাসোয়ান নামে বন দফতরের এক কর্মী বলেন, ‘‘আচমকা দেখি সামনে দাঁড়িয়ে হাতি। ভয়ে মাটিতে পড়ে যায়। ভাগ্যক্রমে হাতি আমার উপরে হামলা চালায়নি।’’
বর্ধমানে ঢোকার আগে বীরভূমের খয়রাশোলে কয়েকটি আলুর খেত এবং চালাবাড়িতে হামলা চালায় হাতির দলটি। বুধবার হাতিগুলি খয়রাশোলের জাহিদপুর জঙ্গলে ছিল। সেখান থেকে রাতেই খয়রাশোল, ময়নাডাল ও ভীমগড় হয়ে হাতিগুলি পাণ্ডবেশ্বরে ঢোকে।
বীরভূমের বন দফতরের আধিকারিক কল্যাণ রাই বলেন, ‘‘হাতির দলটিকে জোর করে তাড়ানো সম্ভব নয়। মনে হচ্ছে ওরা বাঁকুড়ার দিকে যাচ্ছে।’’ একই বক্তব্য বর্ধমানের বন দফতরের আধিকারিক মিলনকান্তি মণ্ডলেরও। তাঁর কথায়, ‘‘হাতির দলটি বাঁকুড়া থেকে এসেছে। ওরা নিজেরাই বাঁকুড়ায় ফিরে যাচ্ছে। আমরা গতিবিধির উপরে নজর রাখছি।’’