রাইপুরে অবস্থান-বিক্ষোভ।
১০০ দিন প্রকল্পে কাজ চালু করা, কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ও আলু কেনা, কৃষিঋণ মকুব সহ বেশ কয়েকটি দাবিতে বৃহস্পতিবার বাঁকড়ার রাইপুর ব্লক অফিসের সামনে ধর্না ও অবস্থান-বিক্ষোভ করল সিপিএম।
এ দিন সকাল ১০টা থেকে ব্লক অফিসের গেটের বাইরে মঞ্চ বেঁধে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা ধর্না অবস্থান শুরু করেন। তার আগে সিপিএমের জোনাল কার্যালয় থেকে সবুজবাজার, ট্রেকার স্ট্যান্ড হয়ে ব্লক অফিস পর্যন্ত একটি মিছিল করা হয়। এ দিন মিছিল ও ধর্না অবস্থানের নেতৃত্বে ছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি। পরে সিপিএমের তরফে রাইপুরের যুগ্ম বিডিও-র কাছে দাবিসম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য ধ্রুবলোচন মণ্ডলের অভিযোগ, “তৃণমূলের সরকার সহায়ক মূল্যে ধান ও আলু কেনার ঘোষণা করেছে। কিন্তু জঙ্গলমহলের চাষিদের কাছ থেকে সরকারিভাবে ধান ও আলু সেভাবে কেনাই হয়নি। ১০০ দিন প্রকল্পে এলাকায় কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমাদের আমলে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, কৃষি পেনশন প্রাপক বহু মানুষের পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান তৃণমূল সরকার।’’ তিনি জানান, ব্লকে ১০০ দিন প্রকল্পের কাজ চালু করা, যাঁরা পূর্বে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, কৃষি পেনশন পেতেন তাঁদের পুনরায় তা দেওয়ার পাশাপাশি কৃষিঋণ মকুবের দাবিতেই এ দিন ধর্না অবস্থান করা হয়েছে।
যদিও সিপিএমের এ দিনের কর্মসূচিকে ‘রাজনৈতিক গিমিক’ বলে কটাক্ষ করেছেন রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ব্লকের তৃণমূল নেতা শান্তিনাথ মণ্ডল। তাঁর দাবি, “১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ আটকে রয়েছে সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের দোষে। সেটা সিপিএমের নেতারা ভাল করেই জানেন। এখন এলাকা থেকে সিপিএমের পায়ের তলার মাটি পুরোপুরি সরে গিয়েছে। সামনের বছরেই বিধানসভা ভোট। তাই সিপিএম নিজেদের অস্তিত্ব জানাতেই এসব শুরু করেছে”। তিনি বলেন, “বয়স না হওয়া সত্ত্বেও সিপিএম নিজেদের বহু লোককে বার্ধক্য ভাতা, কৃষি পেনশন পাইয়ে দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেবা প্রকল্পে নাম নথিভুক্তিকরণের সময়ে সেইসব গরমিল ধরা পড়ে গিয়ে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির আমলেই বাতিল হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করে পুণরায় অনেককেই ভাতা, পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’’ রাইপুরের বিডিও দীপঙ্কর দাস বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী বিপিএল তালিকাভুক্ত না হওয়ার পাশাপাশি কিছু নিয়মের ফাঁসেই ব্লকে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, কৃষি পেনশন প্রাপক কিছু উপভোক্তার নাম বাদ গিয়েছিল। এক্ষেত্রে ব্লকস্তরে কিছু করা হয়নি। আর সরকারি নিয়ম মেনেই সহায়ক মূল্যে ধান, আলু কেনার কাজ করেছে খাদ্য দফতর ও সমবায় সমিতি। সিপিএমের দাবিগুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’