‘বঞ্চনার’ প্রতিবাদে বিজেপি

এ দিন শহরের জুবিলি ময়দান থেকে বিজেপির নেতাকর্মীরা মিছিল শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, কর্মী নিয়োগের সময় স্থানীয় বেকারদের বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০২:০৫
Share:

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনিক দফতরের বাইরে অবস্থান। নিজস্ব চিত্র

চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি। এ বার একই অভিযোগ তুলে পথে নামল বিজেপি। পুরুলিয়ার বেকারদের বঞ্চিত করে বাইরের ছেলেমেয়েদের জেলায় নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সোমবার শহরে মিছিল করে বিজেপি। পরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভও দেখান বিজেপি কর্মীরা।

Advertisement

এ দিন শহরের জুবিলি ময়দান থেকে বিজেপির নেতাকর্মীরা মিছিল শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, কর্মী নিয়োগের সময় স্থানীয় বেকারদের বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। মিছিল শেষ হয় জেলাশাসকের দফতরের সামনে। তারপর চলে বিক্ষোভ। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘বছর দুয়েক আগে প্রাথমিকে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের সময় দেখেছি, এখানে অনেক বহিরাগতের চাকরি হয়েছে। কয়েক দিন আগে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে ৩৮ জনের চাকরি হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কেউ-ই এই জেলার নন।’’

সম্প্রতি তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের এক প্রস্তুতিসভায় জেলার বেকার সমস্যার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন নবেন্দু। তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘‘পুরুলিয়ার বেকার ছেলেমেয়েরা দেখছেন, বাইরে থেকে এসে এখানে অনেকে বিভিন্ন দফতরে কাজে যোগ দিচ্ছেন। কিছু দিন আগে ভূমি দফতরে একই ভাবে বেশ কয়েক জন যোগ দিয়েছেন। বলা হচ্ছে, সরকারি নিয়মে সারা রাজ্যের ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছেন। কিন্তু জেলার বেকারদের তা বোঝানো যাচ্ছে না। তাঁরা বলছেন, ‘মেদিনীপুরের লোক এসে চাকরি করবে, আর আমি কি শুধু ঝান্ডা বইব’?’’ মঞ্চে তখন বসেছিলেন দুই মন্ত্রী— মলয় ঘটক ও শান্তিরাম মাহাতো।

Advertisement

নবেন্দুবাবুর অভিযোগে অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল। দ্রুত সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিলেন দলের তরফে দুই জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও মলয় ঘটক। শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘কে বা কারা বলছে, মেদিনীপুরের কোনও লোক ঢোকায় এখানে সেই জেলার লোকেরা কাজ পেয়ে যাচ্ছে। চ্যালেঞ্জ করছি, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন, শুভেন্দু অধিকারী সে ধরনের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত, তা হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। এ ধরনের মিথ্যা প্রচার থেকে বিরত থাকুন।’’

চাকরিতে স্থানীয়দের বঞ্চনার অভিযোগকে বিজেপি যে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চায়, তা রবিবারই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তৃতা করছিলেন, তখন পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে চপ ভেজে রাজ্যে বেকারত্বের সমস্যা জনসমক্ষে আনার চেষ্টা করেছিলেন বিজেপির যুব মোর্চার কর্মীরা। বেকারত্ব এবং চাকরিতে স্থানীয়দের বঞ্চনার বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে তাঁরা সুর চড়াবেন বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিদ্যাসাগরবাবু এ দিন ঘোষণা করেন, ‘‘মঙ্গলবার এই নিয়ে পথে নামবে মহিলা মোর্চা। ২৯ জুলাই সংখ্যালঘু মোর্চা রাস্তায় নামবে। ১ অগস্ট গোটা জেলায় আধ ঘণ্টা পথ অবরোধ করা হবে।’’

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, পুরুলিয়ায় বিভিন্ন দফতরে ১৬৬ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ হওয়ার কথা। নিয়োগের শর্তই হল, কোনও প্রার্থীকেই তাঁর জেলায় নিয়োগ করা হবে না। সেই নিয়ম মেনেই জেলার কোনও প্রার্থীকে পুরুলিয়ায় নিয়োগ করা হয়নি। পুরুলিয়ার ২৪ জনকে বাঁকুড়া জেলায় নিয়োগ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন