সাইবার জালিয়াতি করে বৃত্তি অনুমোদনের নালিশ

ছাত্র-বৃত্তির টাকা নিয়ে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ উঠল পাড়া ব্লকে। বিডিও (পাড়া) সমীরণ বারিক সম্প্রতি থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, তাঁদের ব্লকের ‘ইউজার আইডি’ এবং ‘পাসওয়ার্ড’ জালিয়াতি করে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ওয়েবসাইটে ঢোকা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাড়া শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

ছাত্র-বৃত্তির টাকা নিয়ে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ উঠল পাড়া ব্লকে। বিডিও (পাড়া) সমীরণ বারিক সম্প্রতি থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, তাঁদের ব্লকের ‘ইউজার আইডি’ এবং ‘পাসওয়ার্ড’ জালিয়াতি করে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ওয়েবসাইটে ঢোকা হয়েছে। সেখানে জমা পড়া স্কলারশিপের জাল আবেদন সবার অলক্ষ্যে অনুমোদন করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সাইবার অপরাধের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর এলাকার দুই ছাত্রীর নামে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ওয়েবসাইটে স্কলারশিপের অনলাইন আবেদন জমা পড়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, ওই আবেদনের প্রিন্টআউট ও অন্য নথির প্রতিলিপি ব্লক অফিসে জমা করতে হয়। ব্লক প্রশাসন কিছু দিন পরে, একসঙ্গে অনেকগুলি আবেদনপত্র যাচাই করে অনলাইনে অনুমোদন দেয়। পরে বৃত্তির টাকা জমা পড়ে আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে। কিন্তু ওই দু’টি আবেদনের জন্য ব্লকে কোনও কাগজই জমা পড়েনি। এ দিকে, আবেদন করার দু’দিন পরেই অনলাইন অনুমোদনও হয়ে যায়। বিডিও (পাড়া) সমীরণবাবুর অভিযোগ, ব্লকের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড জালিয়াতি করে এই কাজ করা হয়েছে।

জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের আধিকারিকেরা টাকা জমা করার আগে আবেদনগুলি একপ্রস্ত যাচাই করতে গিয়ে ওই দু’টি আবেদন দেখে থমকে যান। জমার দু’দিনের মধ্যেই কী করে ওই দু’টি অনুমোদিত হল, তা নিয়ে তাঁদের খটকা লাগে। তাঁরা ব্লকের কাছে বিশদে জানতে চান। তখন দেখা যায়, ওই দু’টি আবেদনের কোনও কাগজই জমা পড়েনি ব্লক অফিসে।

Advertisement

আবেদনপত্রে ওই দুই ছাত্রী পাড়া ব্লকের হড়কতোড় গ্রামের বাসিন্দা বলে লেখা ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে খোঁজ নিতে গিয়ে ওই নামে কারও সন্ধান মেলেনি। ওই দুই ছাত্রী একজন উত্তরপ্রদেশ ও অন্যজন রাজস্থানের কলেজে পড়ে বলে লেখা। তাঁদেপ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বরও ভিন্‌ রাজ্যের ব্যাঙ্কের। সন্দেহ হওয়ায় এরপরেই ব্লক প্রশাসন সরাসরি পুলিশের দ্বারস্থ হন।

গত সেপ্টেম্বরেও এই স্কলারশিপে অনলাইন জালিয়াতির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল পাড়া ব্লকেই। বিডিও জানান, সে বার একটি স্কুলের পড়ুয়া বলে পরিচয় দিয়ে আবেদন করা হয়েছিল। জালিয়াতি টের পেতেই স্কুলটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ভুয়ো ছাত্রের কথা বুঝতে পেরে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড বদলে নেওয়া হয়েছিল সে বার। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক নিখিলেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা যথেষ্ট সচেতন হয়েই কাজ করেন। তাই গলদ ধরা পড়েছে।’’

সমীরণবাবু বলেন, ‘‘নতুন ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড হাতে গোনা কয়েকজন জানেন। এ ক্ষেত্রে বাইরে থেকে কেউ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জালিয়াতির চেষ্টা করতে পারেন বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে একজন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়েই এই সাইবার ক্রাইমের অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। তবে জেলাস্তরে সাইবার ক্রাইমের তদন্ত করার মতো পরিকাঠামো নেই। পরে হয়তো তদন্তভার তাই সিআইডির সাইবার ক্রাইম সেলে দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন