যাত্রীর ব্যাগ না মেলায় বিমান সংস্থাকে জরিমানা

বাঁকুড়ার রবীন্দ্র সরণির বাসিন্দা অর্ক অধিকারী চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। সেখান থেকে কলকাতায় ফেরার পথেই তাঁর ব্যাগ খোয়া গিয়েছিল।

Advertisement

অভিজিৎ সিংহ

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক বছর আগে বিমানে খোয়া যাওয়া ব্যাগ হাতে আসেনি আজও। বাঁকুড়ার ক্রেতা সুরক্ষা আদালত তাই বৃহস্পতিবার সেই বেসরকারি বিমান সংস্থাকে আর্থিক জরিমানা করল। সেই সঙ্গে মিটিয়ে দিতে বলল মামলার খরচও। এমনকী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জরিমানা না দেওয়া হলে সুদও দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Advertisement

বাঁকুড়ার রবীন্দ্র সরণির বাসিন্দা অর্ক অধিকারী চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। সেখান থেকে কলকাতায় ফেরার পথেই তাঁর ব্যাগ খোয়া গিয়েছিল। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক রীনা মুখোপাধ্যায় ও সুবীর সিংহরায় রায় দেন।

তাঁরা ওই বিমান সংস্থাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন। মামলা চালানোর খরচ ২০০০ টাকাও দিতে বলা হয়। না দিলে চল্লিশ দিন পর থেকে বছরে ৯ শতাংশ হারে সুদ-সহ ওই টাকা দিতে হবে। যদিও এই রায়ে মোটেই স্বস্তি পাননি বাঁকুড়ার বাসিন্দা মামলার আবেদনকারী ছাত্রের পরিবার। তাঁরা জানিয়েছেন, সুবিচারের জন্য উচ্চতর আদালতে যাবেন।

Advertisement

বেসরকারি বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখে মন্তব্য করবেন।

অর্কর আইনজীবী কুণালকান্তি ঘোষ জানান, ২০১৭ সালের ১৬ মে অর্ক চেন্নাই থেকে কলকাতায় ফিরছিলেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পরে খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন, তাঁর ধূসর রঙের মালপত্র বোঝাই ব্যাগটি নেই। দেরি না করে তৎক্ষণাৎ বিমান কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেন তিনি। সংস্থার তরফ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপরেই অর্ক বাড়ি চলে যান।

কিন্তু নির্ধারিত দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যাগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। ৩০ মে তিনি পুনরায় ওই বিমান সংস্থাকে ই-মেল করে অভিযোগ জানান। তার পরেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় তাঁরা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন।

এ দিন রায় শোনার পরে তাঁর বাবা রামকৃষ্ণ অধিকারী দাবি করেন, ‘‘ব্যাগের মধ্যে ছেলের পরীক্ষার ফলাফল-সহ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র ছিল। বারবার ব্যাগের খোঁজ করতে কলকাতা-দমদম যাতায়াতের হয়রানিও রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে আমরা ২০ লক্ষ টাকা দাবি করেছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এর মধ্যে আমার ছেলে দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থায় মোটা বেতনের চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু খোয়া যাওয়া ডিগ্রির নথির অভাবে ২০ দিন কাজ করার পরেও চাকরিটা ছাড়তে হয়েছে।’’

তাঁর আক্ষেপ, আবার কবে নতুন করে ফলাফল পাওয়া যাবে, তাও জানা যাচ্ছে না। ফলে ওই ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার তিনি ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

অর্কর কথায়, ‘‘অনেক আশা করে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার জন্য জাপানি ভাষা-সহ বেশ কয়েকটি ভাষা শিখেছিলাম। কিন্তু এখন বিমান সংস্থার গাফিলতির জন্য পরীক্ষার ফলাফল হাত ছাড়া হয়ে গিয়েছে। নতুন ফলাফলও কবে পাব, জানি না। আমার ভবিষ্যতের কথা ভাবলেই চোখে জল আসছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন