Maoists

জেলায় প্রাক্তন মাওবাদীদের নিয়োগ শুরু

এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ‘ভোট কৌশল’ বলেই কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী ও মাওবাদীদের হাতে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের চাকরিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হল বাঁকুড়ায়। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আত্মসমর্পণ করা ৭৭ জন প্রাক্তন মাওবাদী রয়েছেন। মাওবাদীদের হাতে নির্যাতিত পরিবারের সদস্য় রয়েছেন সাত জন। যদিও ভোটের আগে এই নিয়োগ কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতারা।

Advertisement

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “মোট ৮৪ জনকে সেকেন্ড হোমগার্ড পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। বেশির ভাগই প্রাক্তন মাওবাদী। মাওবাদীদের হাতে নির্যাতিত পরিবারের সদস্য কয়েকজন রয়েছেন। তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হচ্ছে। সে রিপোর্ট মিললেই নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।” জেলার বিভিন্ন থানায় তাঁদের নিয়োগ করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে সিমলাপালের বাসিন্দা সাবিত্রী সিংহ জানান, ২০০৯ সালে একটি মাওবাদী বৈঠকে যোগদান করায় তাঁর বিরুদ্ধে সারেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের হয়। প্রায় দু’মাস জেল খেটে জামিন পেয়েছিলেন। ২০১৭ সালে লালগড়ের জঙ্গল থেকে বন্দুক-সহ সারেঙ্গা থানায় আত্মসমর্পন করেন সাবিত্রী। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসেই আত্মসমর্পণ করি। গুমটি চালিয়ে সংসার টানছিলাম। চাকরি পেলে সমস্যা মিটবে। আমরা খুশি।” সারেঙ্গার বাসিন্দা সোমনাথ দুলে বলেন, “মাওবাদী লিঙ্ক-ম্যান হিসেবে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে মামলা করে। ২০১০ সালে আত্মসমর্পণ করি। তার পর থেকে দিনমজুরি করছিলাম। চাকরি পাচ্ছি ভেবেই ভাল লাগছে।”

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই এই মানুষগুলিকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।” যদিও এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ‘ভোট কৌশল’ বলেই কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, “যাঁদের প্রাক্তন মাওবাদী বলে দাবি করা হচ্ছে, তাঁরা আদৌ মাওবাদী ছিলেন কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। এটা তৃণমূলের ভোট-কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।” বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, “শুনেছি, তাঁরা বহু বছর আগেই আত্মসমর্পণ করেছিলেন। অথচ ভোটের মুখে চাকরিতে নিয়োগের কথা মনে পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর।”

বিরোধীদের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। তিনি বলেন, “বিজেপি আর সিপিএম মানুষের পাশে থাকে না। রাজ্য সরকারের যে কোনও ভাল উদ্যোগকে বাঁকা নজরে দেখাটাই অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই সব দলের নেতাদের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন