শব্দে নিষেধ, আতসবাজিতে মেতেছে জেলা

রামপুরহাট বাজারের এক বাজি বিক্রেতাও বলেন, ‘‘দেওয়ালি এবং কালীপুজোতে ফানুসের চাহিদা থাকার জন্য গতবারের তুলনায় বেশি ফানুস আনা হয়েছে।’’

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

বছর তিনেক আগের ঘটনা। মাড়গ্রামের ছোটডাঙাল পাড়ায় বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি করার সময় তিন শিশু-সহ এক যুবক মারা যান। ঘটনার পরে বেআইনি বাজি তৈরির ক্ষেত্রে সতর্ক হয় পুলিশ ও প্রশাসন। কিন্তু তাতে শব্দবাজির দাপট কমেনি। চলতি বছরেও দুর্গাপুজোতে জেলার বিভিন্ন স্থানে শব্দবাজির তাণ্ডবে জেরবার হন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

তবে কালীপুজোর আগে জেলার বিভিন্ন বাজির বাজার ঘুরে দেখা গেল, শব্দবাজির চেয়ে আতসবাজি এবং ফানুস কিনতে ক্রেতারা বেশি আগ্রহী। রামপুরহাট, বোলপুর, সিউড়ি, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া, নলহাটি বা মুরারইয়ের বাজারে এ বার ফানুসের চাহিদা গতবারের তুলনায় বেশি। এক-একটি ফানুসের দাম গড়ে ত্রিশ টাকা।

রামপুরহাট বাজারের এক বাজি বিক্রেতাও বলেন, ‘‘দেওয়ালি এবং কালীপুজোতে ফানুসের চাহিদা থাকার জন্য গতবারের তুলনায় বেশি ফানুস আনা হয়েছে।’’ তার বেশির ভাগ বিক্রিও হয়ে গিয়েছে বলে তাঁর দাবি। তবে পাশাপাশি শব্দবাজিও বিক্রি হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাট বাজারে গিয়ে দেখা গেল, ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানা এলাকা থেকে অনেকে এসেছেন শব্দবাজি কিনতে। ঘটনা হল, তাঁদের মধ্যে দু’-একজন ব্যবসাদারও আছেন।

Advertisement

জেলার অধিকাংশ বাজি বিক্রেতা জানান, দুর্গাপুজোতে শব্দবাজির চাহিদা থাকলেও দেওয়ালি এবং কালীপুজোতে কদর বাড়ে মূলত আতসবাজির। রংমশাল, আকাশবাজি, তুবড়ি, চড়কি, তারাবাজি, রকেট, বিভিন্ন শটের আকাশবাজি দেদার বিকোচ্ছে বাজারে।

বোলপুরে বাজারের এক আতসবাজি বিক্রেতাও জানান, দেওয়ালি এবং কালীপুজোতে বোলপুরে শব্দবাজির বিক্রি প্রায় নেই। দু-একজন দুর্গাপুজোর ‘স্টক’ লুকিয়ে বিক্রি করলেও করতে পারে।

রামপুরহাটের বাজি বাজারে গিয়ে দেখা গেল, চকোলেট, ব্ল্যাকক্যাট, রোলেক্স, মা তারা, দুলাল নামে নানা নিষিদ্ধ শব্দবাজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা দরে। শব্দবাজির পাশাপাশি ধানি বাজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা দামে। বাজারভেদে ১০-৩০ সেন্টিমিটার মাপের তারাবাজির প্রতি প্যাকেট ৩৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

বিভিন্ন কোম্পানির ছোট-বড় বা মাঝারি মাপের রসবাতি বা রংমশালের প্যাকেটের দাম ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা। আর ১২ সেন্টিমিটার থেকে ১২০ সেন্টিমিটারের আকাশবাজির দাম গড়ে ২০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। বোলপুর বা সিউড়ি বাজারে মাটির তৈরি তুবড়ি বিক্রি হতে দেখা গেলেও রামপুরহাট বাজারে তা বেশ অমিল।

রামপুরহাট বাজারের এক বাজি বিক্রেতার কথায়, মাড়গ্রামের ঘটনার পরে রামপুরহাট বাজারে মাটির তৈরি তুবড়ির চাহিদা কমে গিয়েছে।

নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার নিয়মিত পুলিশি নজরদারি চলছে বলে জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন