Smart Class

অতিমারি পর্বে অনলাইনে পাঠ নজর কাড়ল কেন্দ্রের

সমগ্র শিক্ষা মিশন দফতর সূত্রে খবর, অতিমারি পরিস্থিতিতে অনলাইনে পঠনপাঠন চালিয়ে যেতে শিক্ষদের বিষয়ভিত্তিক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয় প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৬
Share:

বাঁকুড়ার জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্মার্ট ক্লাস। ফাইল চিত্র

অতিমারি পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষে তালা পড়লেও পড়ুয়াদের অনলাইনে পঠনপাঠনের বিশেষ ব্যবস্থা করেছিল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। স্মার্ট ক্লাসরুম থেকে আরও নানা উদ্যোগ নজর কেড়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের। এ বার ওই উদ্যোগের কথা জায়গা পেতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কফি টেবিল বুক’-এ।

Advertisement

কেন্দ্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিফর্মস অ্যান্ড পাবলিক গ্রিভেন্স’ (ডিএআরজিপি) দফতর বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ারকে সম্প্রতি জানিয়েছে, বাঁকুড়ার শিক্ষাদানের ওই উদ্যোগ ‘প্রধানমন্ত্রী অ্যাওয়ার্ড ২০২২’-এর বিবেচনার তালিকার মধ্যে রয়েছে। তাই তাঁদের ওই উদ্যোগ কী ভাবে মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করা হবে। সে জন্য ছবি-সহ দ্রুত ওই প্রবন্ধ পাঠাতে বলা হয়েছে। দেশের মুষ্ঠিমেয় কয়েকটি জেলার সঙ্গে ওই সুযোগ প্রাপ্তি বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন বিশেষ স্বীকৃতি বলেই মনে করছে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, জানুয়ারিতে দিল্লি গিয়ে জেলাশাসকের তরফে বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) প্রিয়দর্শিনী এস বাঁকুড়া সমগ্র শিক্ষা মিশনের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তার প্রেক্ষিতেই বাঁকুড়া জেলা সর্বভারতীয় ওই প্রতিযোগিতায় প্রথম সারিতে চলে এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রের দুই প্রতিনিধি বাঁকুড়ায় এসে সমগ্র শিক্ষা মিশনের কাজ খতিয়ে দেখেন ও বেশ কিছু স্কুল পরিদর্শন করেন। স্কুলে গিয়ে শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পিএম পোষণের খাবারের মান খতিয়ে দেখেন। শিশুদের পঠনপাঠনে বিশেষ সুবিধা করে দিতে সমগ্র শিক্ষা মিশনের মাধ্যমে প্রশাসনের চালানো প্রকল্পগুলিও নজর কাড়ে তাঁদের। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের সুবিধার্থে বেশ কিছু স্কুলে গড়ে তোলা পরিকাঠামো, স্যানিটারি ন্যাপকিনের জন্য দেওয়া ভেন্ডিং মেশিন ও ওই ন্যাপকিন নষ্ট করতে ইনসিনেটার মেশিনের ব্যবহার, স্মার্ট ক্লাসরুম, হাতে-কলমে শিক্ষার সুব্যবস্থা পরিদর্শন করেন তাঁরা।

Advertisement

সমগ্র শিক্ষা মিশন দফতর সূত্রে খবর, অতিমারি পরিস্থিতিতে অনলাইনে পঠনপাঠন চালিয়ে যেতে শিক্ষদের বিষয়ভিত্তিক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয় প্রশাসন। শিক্ষকেরাও নিজ নিজ স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ গড়ে সেখানে পঠনপাঠন চালিয়ে যান। জেলা প্রশাসনের চালু করা শিক্ষা সংক্রান্ত ইউটিউব চ্যানেলে বিষয়ভিত্তিক পাঠ্য নিয়মিত আপলোড করা হত। পড়ুয়ারা সেখান থেকেও উপকৃত হয়েছে।

কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার সরাসরি সম্প্রচার দেখেন, উপকৃত পড়ুয়াদের সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলে তাদের মতামত শোনেন। জয়পুর ও কোতুলপুর ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় গড়া স্মার্ট ক্লাসরুম ও সেখানে অনলাইন পড়াশোনার পরিকাঠামোও পরিদর্শন করেন তাঁরা। এরপর দিল্লি ফিরে গিয়ে প্রশাসনের এই সব বিশেষ ব্যবস্থাপনা তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর ‘কফি টেবিল বুক’-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত করতে চেয়ে জেলাশাসককে ইমেল পাঠান।

শনিবার জেলাশাসক বলেন, “কেন্দ্রীয় দল স্কুল পরিদর্শন করে পঠনপাঠনের সামগ্রিক পরিকাঠামো দেখে খুশি হয়েছিলেন। সাধারণ মানুষের কাছেও তাঁরা পড়াশোনার সার্বিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছিলেন। কোভিড পরিস্থিতিতে কী ভাবে ছাত্রছাত্রীদের ডিজিটাল মাধ্যমে যুক্ত করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা জানিয়েছিলাম।’’

সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এর আগে পড়ুয়াদের অপুষ্টি দূরীকরণে জেলা প্রশাসনের নেওয়া প্রকল্প ‘অপারেশন পুষ্টি’-র জন্য কেন্দ্রের ‘স্কচ অ্যাওয়ার্ড’ মিলেছিল। তবে সরাসরি শিক্ষাব্যবস্থা ও পরিকাঠামোয় দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য কোনও কেন্দ্রীয় পুরস্কার আগে আসেনি। এ বারই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর কফি টেবিল বুক-এ প্রশাসনের উদ্যোগ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হতে চলেছে। এছাড়া ‘প্রধানমন্ত্রী অ্যাওয়ার্ড’-এর প্রতিযোগিতাতেও এগিয়ে রয়েছে বাঁকুড়া জেলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন