West Bengal Panchayat Election 2023

রাস্তা হয়নি, নেই পর্যাপ্ত পানীয় জলও, প্রতিবাদে ভোট বয়কটের ডাক আদিবাসী গ্রামের

খুদিপাথর রাজাকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রাম। ওই গ্রামে সব মিলিয়ে ১৬টি আদিবাসী পরিবারের বসবাস। সব পরিবারই কৃষিনির্ভর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ১৬:১৪
Share:

খুদিপাথর রাজাকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রাম। নিজস্ব চিত্র।

গ্রামে রাস্তা হয়নি। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। মানুষের হাতে কাজ নেই। বার বার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে জানিয়েও লাভ হয়নি। প্রতিবাদে পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের ডাক দিল বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের খুদিপাথর গ্রাম।

Advertisement

খুদিপাথর আদিবাসী গ্রামটি রাজাকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। ওই গ্রামে সব মিলিয়ে ১৬টি আদিবাসী পরিবারের বাস। সব পরিবারই কৃষিনির্ভর। কিন্তু বেশির ভাগ পরিবারের হাতে যা জমি রয়েছে, সেই জমির উৎপাদিত ফসলে সারা বছর সংসার চলে না। বহু দিন ধরে একশো দিনের কাজও অমিল। অগত্যা পার্শ্ববর্তী টিলা থেকে পাথর বয়ে এনে তা ভেঙে কোনও ক্রমে দিনানিপাত করেন গ্রামের মানুষ। গ্রামে পৌঁছনোর একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা। বর্ষায় সেই রাস্তার মাটি ধুয়ে বেরিয়ে পড়েছে এবড়ো-খেবড়ো পাথরের চাঁই। তা ডিঙিয়েই চলাফেরা করেন গ্রামের মানুষ। গ্রামে পানীয় জলের জন্য রয়েছে একটি ট্যাপকল ও একটি নলকূপ। মাঝেমধ্যেই নলকূপ বিকল হয়ে পড়ে থাকে মাসের পর মাস। গ্রামে একটি ট্যাপকলের সাহায্যে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহের যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাতেও জল আসে অনিয়মিত। ট্যাপে যে দিন জল আসে, সে দিন এত কম সময়ের জন্য তা আসে, যে কার্যত মারামারি করে পানীয় জল সংগ্রহ করতে হয় গ্রামের মানুষকে। অভিযোগ, এই বিষয়গুলি নিয়ে বার বার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বিডিও অফিসে দরবার করেও সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়েই ভোট বয়কটের ডাক দিলেন খুদিপাথর গ্রামের মানুষেরা। গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে ভোট বয়কটের সমর্থনে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে।

খুদিপাথর গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুড়া হাঁসদা ও অর্চনা হাঁসদা বলেন, ‘‘ভোট এলেই আমাদের গ্রামে বিভিন্ন দলের নেতারা আসেন। প্রতি বার ভোটের আগে প্রতিশ্রুতিও দেন নেতারা। কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলে সকলে ভুলে যান। তাই এ বার আর ভোট নয়। যত ক্ষণ না আমাদের গ্রামের রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে এবং পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা হচ্ছে, তত ক্ষণ আমরা ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

Advertisement

স্থানীয় সিপিএম নেতা গৌতম মাহাতো বলেন, ‘‘গ্রামের পানীয় জল সরবরাহ ও রাস্তার হাল অত্যন্ত খারাপ। এই গ্রামের মানুষেরা সব দিক থেকেই বঞ্চিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, জঙ্গলমহল হাসছে। কিন্তু জঙ্গলমহলের আসল ছবি এটাই।’’ তৃণমূলের রানিবাঁধ ব্লক সভাপতি তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য চিত্ত মাহাতো বলেন, ‘‘ওই এলাকার মাটি খুব শক্ত। তাই সেখানে শুখা মরসুমে পাইপ লাইন বসানো জটিল। তাই আমরা বর্ষার জন্য অপেক্ষা করছি। ভোট মিটে গেলেই সেখানে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হবে। পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করলে ওই গ্রামের মানুষই পরবর্তীতে সমস্যায় পড়বেন। আমরা সে কথা গ্রামবাসীদের জানিয়ে ভোট বয়কট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন