বড়দিনের কী মজা, বুঝল কাল্টু

বড়দিনের আনন্দ সমাজের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪২
Share:

একসাথে: পুঞ্চার দামোদরপুরে এসডিও, জয়েন্ট বিডিও। নিজস্ব চিত্র

বড়দিনের আনন্দ সমাজের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। পদে ভারী হলেও, সে সব ঝেড়েই তাঁরা ওই শিশুদের নিজের লোক হওয়ার চেষ্টা চালালেন। আর পুঞ্চার শবর শিশু এবং কেন্দার তফসিলি উপজাতির মুদি শিশুরাও ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে পেয়ে জড়তা কাটিয়ে অন্যরকম একটা দিন কাটাল।

Advertisement

ইংরেজ আমল থেকেই শবরদের উপরে অপরাধীর তকমা পড়ে গিয়েছিল। মহাশ্বেতাদেবী ও গোপীবল্লভ সিংহ দেও সেই অপবাদ থেকে শবরদের মুক্তি দিতে পশ্চিমবঙ্গ শবর খেড়িয়া কল্যাণ সমিতি গঠন করে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন। শবররা এখনও পিছিয়ে।

মুদিরাও পিছিয়ে পড়া। তাই বড়দিনের খুশির আমেজ তাদের কাছে পৌঁছে দিতেই ‘সান্তাক্লজ’ হয়ে গিয়েছিলেন আধিকারিকেরা।

Advertisement

বড়দিনের সকালে পুঞ্চার দামোদরপুরে শবর শিশুদের প্রাথমিক স্কুল চত্বরে ডেকে নিয়ে আসা হয়। তাদের মাথায় পরিয়ে দেওয়া হয় রং চঙে টুপি।

হাতে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় চকোলেট। তাদের নিয়ে কেক কাটলেন এসডিও সঞ্জয় পাল, জয়েন্ট বিডিও দীপ চট্টোপাধ্যায়। বাদ গেল না নিজস্বী তোলাও। জয়েন্ট শিশুদের নিয়ে নিজস্বী তুললেন।

প্রাথমিকের পড়ুয়া মিতু শবর, প্রশান্ত শবর, কাল্টু শবর বলে, ‘‘বড়দিনে যে এত মজা হয়, জানতাম না। আমরা কেক, চকোলেট খেয়েছি। সবাই মিলে খুব হইচই করেছি।’’

দুপুরে কংসাবতী নদীর তীরে কেন্দা থানার সৌরাং গ্রামে কচিকাঁচাদের নিয়ে প্রশাসনের কর্তারা মাতলেন পিকনিকে। দুপুরে পাত পেড়ে সবাই এক সাথে খেতে বসলেন। কেন্দা পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থসারথি মাহাতো বলেন, ‘‘আধিকারিক থেকে তফসিলি উপজাতির শিশুরা সবাই এক সঙ্গে পাত পেড়ে খেলেন। এত আনন্দ সবাই খুব কমই পেয়েছি।’’

চতুর্থ শ্রেণির হেমন্ত মুদি, বিশাল মুদি, পল্লবী মুদির কথায়, ‘‘পিকনিক কাকে বলে এর আগে আমরা জানতাম না। সবাই মিলে চেটেপুটে খেয়েছি। খেলাধুলো করে হইহই করেছি।’’ শুধু তারাই নয়, ছিলেন কিছু অভিভাবকও। তাঁদের মধ্যে পল্লবীর বাবা অজিত মুদি বলেন, ‘‘জঙ্গলে মাটিতে বসে সবাই মিলে পাত পেড়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। এ দিনটার কথা আমরা কোনও দিন ভুলব না।’’

সৌরাং গ্রামে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে একটি বড় আকারের ফলের বাগান হয়েছে। গ্রামের সবাই এই ফলের বাগানে কাজ করেন। প্রশাসনের কর্তারা পিকনিকের ফাঁকে ফলের বাগান ঘুরে দেখেন।

মানবাজারের এসডিও সঞ্জয় পাল সপরিবারে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বড়দিনের আনন্দ ওদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পেরে আমরাও খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন