কাজ করলেই মিলবে ভোট, ‘কৌশল’ ধীরুদার

বামফ্রন্ট আমলেও কোনও দিনও পরাজয়ের মুখে পড়েননি। সর্বশক্তিতে লড়েও তাঁর হাত থেকে কখনও পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিতে পারেনি তৎকালীন শাসক সিপিএম।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

মল্লারপুর শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৮
Share:

ব্যস্ত: ধীরেন্দ্রমোহন। নিজস্ব চিত্র

ভোটার তালিকায় নাম ওঠার পর থেকেই তিনি লড়ছেন ভোটযুদ্ধে। বামফ্রন্ট আমলেও কোনও দিনও পরাজয়ের মুখে পড়েননি। সর্বশক্তিতে লড়েও তাঁর হাত থেকে কখনও পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিতে পারেনি তৎকালীন শাসক সিপিএম।

Advertisement

ভোটের ময়দানে জয়-পরাজয় নিয়ে তাঁর নিজেরও কোনও চিন্তা নেই। ‘ধীরুদা’র কাছে উন্নয়নই সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

মল্লারপুরের ফতেপুর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা, ৫৮ বছরের ধীরেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকার বাসিন্দারা তাঁকেই ডাকেন ধীরুদা নামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৯৮২ সালে ভোটার তালিকায় নাম উঠেছিল তাঁর। পরের বছরই কংগ্রেসের টিকিটে জিতে মল্লারপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান হন তিনি। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন একই পদে। ১৯৯৮ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও প্রধান হতে পারেননি। সে বার এক দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে দলে টেনে বোর্ড গড়ে সিপিএম। ২০০৩ সালে প্রধান পদ সংরক্ষিত হওয়ায় উপপ্রধান হন তিনি। ২০০৮ সালে ফেরেন পুরনো কুর্সিতেই।

Advertisement

২০১২ সালে ধীরুদা যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। ২০১৩ সালে ভোটে জিতে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। শুধু পঞ্চায়েত পরিচালনাই নয়, দলীয় সংগঠনের কাজেও সমান দক্ষ তিনি। ১৯৯৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির পাপাপাশি জেলা যুব কংগ্রেস এবং ছাত্রপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব সামলেছেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর দলের জেলা কমিটির পাশাপাশি কিসান-মজদুর সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্যও নির্বাচিত হন।

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের জেলা পরিষদের দু’টি আসনই সংরক্ষিত। তাই দল তাঁকে মহম্মদবাজার ব্লকের ২৩ নম্বর আসনে প্রার্থী করেছে। ধীরুদার পুরনো ৯ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী চাইনাদেবী। কিন্তু ভোটের লড়াইয়ে নিজের বা স্ত্রীর জয়-পরাজয় নিয়ে চিন্তিত নন ধীরুদা। অন্য প্রার্থীরা যখন নির্বাচনী কৌশল বা পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আদালতের রায়ের বিষয়ে আলোচনায় ব্যস্ত, তখন অনুগামীদের নিয়ে উন্নয়নের কাজের রূপরেখা তৈরিরে মগ্ন ধীরুদা।

এলাকাবাসীর একাংশের বক্তব্য, তাঁর পরিচালনায় ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে, ২০১০-১১, ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষে সামগ্রিক বিচারে ভাল কাজের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে মল্লারপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে সামগ্রিক ভাল কাজের নিরিখে রাজ্যের যে দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি। ওই পঞ্চায়েত সমিতিরই সভাপতি ধীরেন্দ্রমোহনবাবু।

তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ কাজ দেখেই ভোট দেবেন। তাই হারজিৎ নিয়ে মাথা ঘামাই না। নতুন নির্বাচনী এলাকায় কী কী উন্নয়নের কাজ বাকি, তার তালিকা করছি। সময়-সুযোগ মতো সে কাজ করার চেষ্টা করব।’’ এলাকার কয়েক জন বাসিন্দার কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত প্রধান থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে উন্নয়ন কী ভাবে করতে হয় তা দেখিয়েছেন ধীরুদা। জেলা পরিষদে কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তিনি পেলে আমরা আরও বেশি করে উন্নয়নের স্বাদ পাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন