খেতে লুকিয়ে ভোট কর্মীরা

সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুই জেলার জঙ্গলমহলে ভোট করতে গিয়ে এমনই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হল ভোটকর্মীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০২:৩১
Share:

বাঘমুণ্ডির মাঠা হাইস্কুলের বুথে ছড়িয়ে ভোটের সরঞ্জাম। নিজস্ব চিত্র

বুথ দাপাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। প্রাণ বাঁচাতে শেষে ভোটকর্মীদের লুকিয়ে থাকতে হল তিল জমিতে। কোথাও আবার গ্রামের লোকজনের বাড়ি, দোকানে ঢুকে পড়তে হয় ভোটকর্মীদের।

Advertisement

সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুই জেলার জঙ্গলমহলে ভোট করতে গিয়ে এমনই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হল ভোটকর্মীদের।

এ দিন বেলায় বাঁকুড়ার রাইপুর থানার চাকার ১২৪ নম্বর বুথে হইহই করে এক দল দুষ্কৃতী বন্দুক, তির প্রভৃতি নিয়ে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালায়। তারা প্রথমেই বুথের দরজায় থাকা পুলিশ কর্মীর হাত থেকে অত্যাধুনীক আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। তারপর বুথে ঢুকে ভোটকর্মীদের দিকে তির লক্ষ্য করে। ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীদের হাতে বন্দুক ছাড়াও তির-ধনুক, লাঠি ছিল। ওরা বুথে ঢুকেই বলা নেই, কওয়া নেই আমাদের মারধর করতে শুরু করে।’’ ভোটকর্মী দিব্যেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দিকে ওরা তির উঁচিয়ে ছিল। হাতজোড় করে বলি, ‘আমাদের প্রাণে মারবেন না। আমরা ভোট কর্মী।’ প্রাণের দায়ে কোনও রকম উপায় না পেয়ে আমরা দৌড়ে পালাই।’’

Advertisement

বুথের পাশেই ছিল তিল জমি। সেখানেই ঢুকে পড়ে লুকিয়ে পড়েন পাঁচ ভোট কর্মী। তাঁরা জানান, লুকিয়ে থেকে বুথের দিকে নজর রাখছিলেন। দুষ্কৃতীরা যদি খোঁজ করতে করতে সেখানে এসে পড়েন, এই ভয়ে অনেকে কাঠ হয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে তাঁরা দেখেন পুলিশ সেখানে আসছে। তার পরেই হইহই করে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে পালায়। এরপরেই তাঁরা জমির ভিতর থেকে বেরিয়ে আসেন।

দুপুরে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল বাঘমুণ্ডির মাঠা জুনিয়র হাইস্কুলের বুথেও দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। জায়গাটা অযোধ্যা পাহাড়ের নিচে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বুথের ভিতরের সমস্ত জিনিসপত্র তছনছ হয়ে পড়ে রয়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ব্যালট পেপার, আঙুলে লাগানোর কালির বোতল, খাম, ভোটের নানা সরঞ্জাম, ভোটকর্মীদের ব্যাগপত্র। জানালায় ঝুলছে ভেজা গামছা। ভোটকেন্দ্রের বেশ কিছুটা দূরে পড়ে কিছু পোড়া ব্যালট।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, গোলমালের সময়ে প্রাণ বাঁচাতে ভোটকর্মীরা অসহায় ভাবে বুথ ছেড়ে ছুটে পালান। তাঁদের কেউ দোকানে, কেউ বা লোকের বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েন। পরে পুলিশ বাহিনী এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বাইরে যাঁরা লাইনে ছিলেন, তাঁরাও ছোটেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement