ই-মেলে জমা বহু মনোনয়নই, দাবি

নির্দিষ্ট করে ই-মনোনয়নের কোনও সংখ্যা জানাতে চাননি জেলার মহকুমাশাসকেরাও। তবে কত ই-মনোনয়ন জমা পড়েছে তা দাবি করেছেন বীরভূমের বাম-বিজেপি নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ০১:২৮
Share:

শ্রোতা: তৃণমূলের প্রচারসভায়। মঙ্গলবার মহম্মদবাজারে। নিজস্ব চিত্র

হোয়াট্‌সঅ্যাপের পরে এ বার ই-মেলে পাঠানো মনোনয়নপত্রকেও মঙ্গলবার বৈধতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পঞ্চায়েতের ত্রি-স্তরে এমন ই-মনোনয়নের সংখ্যা কত, তা নিয়ে বীরভূম জেলা প্রশাসন রাত পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেনি। ফোন, এসএমএসের উত্তর দেননি জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী। নির্দিষ্ট করে ই-মনোনয়নের কোনও সংখ্যা জানাতে চাননি জেলার মহকুমাশাসকেরাও।

Advertisement

তবে কত ই-মনোনয়ন জমা পড়েছে তা দাবি করেছেন বীরভূমের বাম-বিজেপি নেতারা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোমের কথায়, ‘‘আদালত যে সময়ের কথা উল্লেখ করেছে, সেই সময়ের মধ্যে ই-মেলে পাঠানো মনোনয়ন হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৩৫টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৩২টি এবং জেলা পরিষদের ১৮টি আসনে। জেলা পরিষদের আরও দুটি আসনেও মনোনয়ন জমা করা হয়েছে। তবে সেগুলি সময়ের বর্ডার লাইনে রয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের আবার দাবি, ‘‘জেলা পরিষদের সাতটি আসনে কমিশনের কাছে ই-মেলের মাধ্যমে মনোনয়ন জমা হয়েছে। সিউড়ি ২, ময়ূরেশ্বর, রামপুরহাট মহকুমায় বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও মনোনয়ন জমা হয়েছে। তবে সংখ্যা কত, জানাতে সময় লাগবে।’’

বামেদের থেকে পিছিয়ে কেন?

Advertisement

জেলা বিজেপির এক নেতার দাবি, ‘‘শাসকদলের উন্নয়নের বাধায় থমকে গিয়ে ই-মেলের মাধ্যমে যা মনোনয়ন পাঠানো হয়েছে সেগুলির অধিকাংশই ৯ তারিখ রাতে। ২৩ এপ্রিল আমরা মনোনয়ন জমার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু, বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ে হামলা, দলের এক কর্মী খুন এবং জখম হওয়ায় সব তালগোল পাকিয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়নি।’’

এ বারের ভোটের শুরু থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে বে-লাগাম সন্ত্রাসের অভিযোগ করে এসেছে বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, প্রতিটি ব্লক অফিসের সামনে শাসকদলের ‘উন্নয়ন’ দাঁড়িয়ে থেকে মনোনয়ন জমায় বাধা দিয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্যেও চাপ দেওয়া হয়েছে বলে বিরোধীদের দাবি। তার জেরেই জেলা পরিষদের কোনও আসনে প্রার্থী দেওয়া যায়নি বলেও বিরোধীদের বরাবরের দাবি। আরও অভিযোগ, তার ফলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির ৮০ শতাংশ জয়ী হয়েছে শাসকদল। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এর পরেও জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল হুঙ্কার দিয়েছেন ভোটের দিনেও মানুষ রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন। এটা ভোটের নামে প্রহসন ছাড়া আর কী।’’ সে সব অভিযোগের কোনওটাই অবশ্য মানতে চাননি শাসকদলের নেতারা।

এই পরিস্থিতিতে আদালতের রায়ে ‘নেই ভোটের বীরভূমে’ ফের আশার আলো দেখছেন বিরোধীরা। তবে ই-মেলে পাঠানো মনোনয়নের কতগুলি বৈধতা পায়, সেটার জন্য অপেক্ষা। একই সঙ্গে, প্রশাসনের এ ভাবে কুলুপ আঁটাকে ভাল চোখে দেখছেন না বিরোধী দলের
নেতারা। তাঁদের দাবি, ‘‘এর পিছনেও অন্য কোনও অভিসন্ধি থাকতে পারে।’’ রামকৃষ্ণ রায় বলছেন, ‘‘প্রথম থেকেই শাসকদলের নির্দেশে কাজ করছে প্রশাসন ও পুলিশ। এটা আর নতুন কী।’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আগের যা ঘটেছে সেটা অতীত। ই-মেল মারফত মনোনয়ন পাঠানোর সমস্ত তথ্য আমাদের হাতে আছে। তাই কেউ চাইলেই সেটার সময় বা বৈধতা বদলে দিতে পারবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন