লাফিয়ে বাড়ল বিরোধীদের মনোনয়ন

কাশীপুরে ব্লক অফিসের মুখে এত দিন যাঁরা শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলছিলেন, তাঁরাও রঘুনাথপুর মহকুমাশাসকের অফিসে নির্বিঘ্নে মনোনয়ন জমা দিলেন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

মহকুমাশাসকের অফিসে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির মনোনয়ন শুরু হতেই স্বস্তি পেলেন পুরুলিয়ার বিরোধীরা। এক লাফে বিরোধীদের মনোনয়নের সংখ্যা বেড়ে গেল অনেকটাই। কাশীপুরে ব্লক অফিসের মুখে এত দিন যাঁরা শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলছিলেন, তাঁরাও রঘুনাথপুর মহকুমাশাসকের অফিসে নির্বিঘ্নে মনোনয়ন জমা দিলেন।

Advertisement

কাশীপুর ব্লক অফিসে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির মনোনয়ন নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সেখানে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মারধর করে বিরোধীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছিল। এমনকী দুষ্কৃতীদের মারে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া-সহ সিপিএমের তিন জন বয়স্ক নেতা গুরুতর আহত হন।

রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন পর্বের শেষের দিকে ব্লক অফিসের পাশাপাশি মহকুমাশাসকের অফিসেও পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীরা মনোনয়ন দিতে পারবেন বলে জানানোয়, কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেয়েছেন বলে দাবি বিরোধীদের। শনিবার ও সোমবার রঘুনাথপুরে মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন দিতে আসেন বিভিন্ন ব্লকের বিরোধী প্রার্থীরা। তাঁদের মধ্যে ভিড় বেশি চোখে পড়ে কাশীপুর ব্লকের বিরোধীদের।

Advertisement

বিজেপি-র দাবি, কাশীপুরের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৮টি আসনের মধ্যে গত দু’দিনে ১২৮টি আসনেই তাঁদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করেছেন। পঞ্চায়েত সমিতির ৩৩টি আসনের মধ্যে মনোনয়ন তাঁরা দিয়েছেন ৩১টিতে। সিপিএম সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির অধিকাংশ আসনেই তারাও প্রার্থী দিয়েছে।

অন্যদিকে, কাশীপুর ব্লকের সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতে আসন সমঝোতা করেছেন বলে দাবি করছেন বিরোধীরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সিপিএম, এসইউসি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সোনাইজুড়ি অঞ্চল সংগ্রাম কমিটি গঠন করে নির্বাচনে নেমেছেন।

ওই কমিটির কর্মকর্তা তথা এসইউসি-র সোমনাথ কৈবর্ত্যের অভিযোগ, ‘‘কাশীপুর ব্লক অফিসে মনোনয়ন দিতে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের মারধর করেছিল। তাই মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন শুরু হতেই আমরা সোনাইজুড়ির ১০টি আসনের মধ্যে সাতটিতে দিয়েছি। পঞ্চায়েত সমিতির দু’টি আসনেই দেওয়া হয়েছে।’’

মহকুমাশাসকের অফিসে নির্বিঘ্নে মনোনয়ন মিটলেও প্রার্থীরা পরবর্তী কালে মনোনয়ন যাচাইয়ের সময় ব্লক অফিসে সশরীরে কী ভাবে হাজির হবেন, তা নিয়ে দুর্ভাবনায় বিরোধীরা। সেখানে হাজির না হতে পারলে, মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাবে। তাঁদের দাবি, মনোনয়ন যেমন মহকুমাশাসকের অফিসে হয়েছে, তেমনই তা যাচাইয়ের কাজ-সংক্রান্ত শুনানি ব্লক অফিসের পরিবর্তে মহকুমাশাসকের অফিসেই করানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

বিজেপি-র কাশীপুরের একটি মণ্ডলের সভাপতি মলয় মিশ্রের অভিযোগ, ‘‘মনোনয়নের প্রথম থেকেই কাশীপুর ব্লক অফিস যে ভাবে শাসকদলের লোকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে দখল করে রেখেছিল, তার পুনরাবৃত্তি হলে মনোনয়ন যাচাই-সংক্রান্ত শুনানিতে বিরোধী প্রার্থীরা যেতে পারবেন না। তাই আমাদের দাবি, মহকুমাশাসকের অফিসেই ওই কাজ হোক।’’

তবে জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী মনোনয়ন যাচাই ও শুনানি ব্লক অফিসেই হয়। স্থান পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কাশীপুরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা থাকছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন