২৫ পড়ুয়া নিয়ে চালু নতুন ক্যাম্পাস

বাঁকুড়ায় পথ চলা শুরু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের

রাঢ়বঙ্গের বাঁকুড়াতেও ক্যাম্পাস খুলল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বাঁকুড়ার ছাতনায় ২৫ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস। এতে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো শুখা জেলাগুলি বিকল্প চাষ ও কৃষি প্রযুক্তিতে নতুন দিশা পাবে বলেই অভিমত কৃষি মহলের। বাঁকুড়ায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা অবশ্য শুরু হয়েছিল বাম আমলের শেষ দিক থেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ছাতনা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০২:০২
Share:

ক্লাস ঘর গোছানোর কাজ চলছে জোরকদমে।—নিজস্ব চিত্র

রাঢ়বঙ্গের বাঁকুড়াতেও ক্যাম্পাস খুলল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বাঁকুড়ার ছাতনায় ২৫ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস। এতে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো শুখা জেলাগুলি বিকল্প চাষ ও কৃষি প্রযুক্তিতে নতুন দিশা পাবে বলেই অভিমত কৃষি মহলের।
বাঁকুড়ায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা অবশ্য শুরু হয়েছিল বাম আমলের শেষ দিক থেকেই। তখন জেলার তালড্যাংরা ও শুশুনিয়ায় উদ্যানপালন দফতরের কৃষি খামারে ক্যাম্পাস গড়ার চিন্তাভাবনা চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল এসে জায়গাও দেখে গিয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে সে উদ্যোগ থমকে যায়। রাজ্যে পালা বদলের পরে ফের এই জেলায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট গড়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ২০১২ সালে বড়জোড়ায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় বর্ধমান ও বাঁকুড়ায় এবং উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে একটি করে ক্যাম্পাস গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এর মধ্যে বর্ধমান ও তপনে ক্যাম্পাস আগেই চালু হয়ে গেলেও পরিকাঠামো না থাকায় বাঁকুড়ায় তা গড়ে তোলা যাচ্ছিল না। অবশেষ ছাতনা আইটিআই কলেজেই অস্থায়ী ভাবে ক্যাম্পাস গড়ে ক্লাস শুরু করল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
গত সোমবার থেকে পুরোদমে চালু হয়েছে নতুন ক্যাম্পাস। আপাতত ২৫ জন ছাত্রছাত্রী এখানে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কলেজের দোতলায় ছেলেদের হস্টেল গড়া হয়েছে। মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ছাতনার একটি গার্লস স্কুলের হস্টেলে।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অসিতকুমার চক্রবর্তী বলেন, “শুশুনিয়ার কৃষি খামারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস গড়া হবে। আপাতত এই আইটিআই-এ ক্লাস শুরু হল।’’ ছাতনার বিধায়ক শুভাশিস বটব্যাল জানান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস গড়ার জন্য রাজ্য সরকার প্রথম দফায় ১০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। দরপত্র ডেকে ক্যাম্পাস গড়ে তোলার কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া চলছে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চালু হওয়ায় জেলার কৃষিতে কতটা প্রভাব পড়বে? উপাচার্য অসিতবাবু বলেন, “চাষ নিয়ে নানা গবেষণা হবে। কী কী বিকল্প চাষ এখানে সম্ভব, তা খতিয়ে দেখে কৃষকদের সেই চাষে উৎসাহিত করব আমরা। কৃষকদের নিয়ে নিয়মিত কৃষি সংক্রান্ত আলোচনা সভা হবে। কিছু গ্রাম আমরা দত্তক নিয়েও চাষ করব।’’ শুভাশিসবাবু বলেন, “বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর হল শুখা জেলা। এখানে জলের অভাব। কম জলে কী ভাবে চাষ হয়, তা নিয়ে গবেষণা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নানা প্রকল্প রয়েছে। সেগুলির সুবিধাও এই এলাকার চাষিরা পাবেন।’’

উল্লেখ্য, গতানুগতিক চাষের বাইরে বেরিয়ে বিকল্প চাষের সন্ধানে বাঁকুড়া জেলায় নানা পরীক্ষা চালাচ্ছে উদ্যানপালন ও কৃষি দফতর। জেলায় আম, আঙুর, কচু, ক্যাপসিক্যামের মতো অর্থকরী ফসলের চাষ সাফল্যের সঙ্গে হচ্ছে। পেঁয়াজ চাষেও বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে এই জেলায়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলে আরও বিকল্প চাষের খোঁজ মিলবে বলেই মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধুমাত্র ছাতনাতেই যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড আটকে না থাকে সে বিষয়ে সচেতন হতে বলেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কৃষক সংগঠন অগ্রগামী কিষাণ সভার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মানিক মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “জেলার সমস্ত কৃষকই যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা পান, সে দিকে নজর রাখতে হবে। বাঁকুড়ার তিনটি মহকুমাতেই বিকল্প চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সব প্রান্তের চাষিদের সঙ্গেই প্রথম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ রাখা উচিত।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন