বাঁকুড়ার লালবাজারে।—নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ও পুরসভা স্তরে আন্দোলন গড়ে তুলতে মানুষকে সংগঠিত করার কাজ শুরু করতে হবে। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার লালবাজারে খাদ্য আন্দোলনের শহিদ প্রহ্লাদ গরাইয়ের স্মরণে আয়োজিত বামফ্রন্টের এক সমাবেশে এসে এই বার্তা দিলেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেন, “পুজোর মরসুমের পরেই তীব্র আন্দোলনে নামার শপথ নিতে হবে আমাদের। বাঁকুড়া জেলার ১৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি পুরসভায় মানুষকে সংগঠিত করে সেই আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে।’’
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই পঞ্চায়েত, পুরসভা এবং লোকসভা ভোটে জেলা জুড়েই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাম শিবির। যদিও বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে জেলার ১২টি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসন পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছিল বিরোধী শিবিরে। তবে ইতিমধ্যেই বিষ্ণুপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আগামী দিনে আরও ভাঙন হবে কিনা, তা নিয়েও চিন্তিত বাম নেতারা। জেলার ফ্রন্ট নেতাদের মতে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামাঞ্চলে সংগঠন আরও মজবুত করতে এখন থেকেই যাতে দল সক্রিয় হয় এদিন পরোক্ষে সেই বার্তাই দিয়েছেন বিমানবাবু।
এ দিনের সমাবেশে উপস্থিত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র তাঁর বক্তব্যে, বিরোধী বিধায়কদের দল বদল করা এবং বিরোধীদের হাতে থাকা বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েতের বিরোধী জনপ্রতিনিধি ভাঙিয়ে তৃণমূলের দলে টেনে আনার ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। অমিয়বাবু বলেন, “ওরা (তৃণমূল) মুখে বলে পুরসভা দখল করছে। বিরোধী জনপ্রতিনিধি কেনাবেচার সংস্কৃতি এ রাজ্যে ছিল না। ক্ষমতা থাকলে ওই সব জনপ্রতিনিধিকে পদত্যাগ করিয়ে ফের নির্বাচন করুক তৃণমূল।’’ বিমানবাবু অবশ্য রাজ্যে দলবদলু বিধায়কদের নিয়ে কিছু বলেননি। পরে এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে অমিয়বাবুর সুরেই তিনি বলেন, “গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতেই এই নোংরা খেলায় নেমেছে তৃণমূল।’’ এ দিন লালবাজারে বামফ্রন্টের এই সমাবেশে প্রায় সাড়ে চারশো মানুষ এসেছিলেন। সিপিএমের বাঁকুড়া জোনাল সম্পাদক প্রতীপ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এলাকার মানুষ স্বতস্ফুর্ত ভাবে সমাবেশে এসেছেন।’’