পুরস্কারে ‘হ্যাটট্রিক’ চায় জেলা

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রতি বছর সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে রাজ্যের একটি জেলা পরিষদ,  দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি, ও ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে পুরস্কৃত করে কেন্দ্র। পঞ্চায়েতগুলির ক্ষেত্রে অবশ্য সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি কোনও একটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের বিষয়ও বিবেচিত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০৯
Share:

নিরীক্ষণ: জেলা পরিষদের ‘কাজকর্ম’ খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। সোমবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

কাজের নিরিখে রাজ্যের অন্য জেলা পরিষদগুলিকে পিছনে ফেলে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে পরপর দু’বার কেন্দ্রীয় সরকারের ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় পঞ্চায়েত স্বশক্তিকরণ পুরস্কার’ জিতে নিয়েছিল বীরভূম জেলা পরিষদ।

Advertisement

২০১৯ সালেও কেন্দ্রীয় সরকারের ওই পুরস্কার প্রাপক হিসেবে বীরভূম জেলা পরিষদ ‘হ্যাটট্রিক’ করবে কিনা, তা যাচাই করতে সোমবার সিউড়িতে এলেন দুই সদস্যের এক প্রতিনিধিদল। প্রশাস,নিক সূত্রে খবর, সেই দলে রয়েছেন সুজয় ভট্টাচার্য এবং দেবাশিস প্রামাণিক। তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত একটি নিরপেক্ষ সংস্থার হয়ে জেলায় এসেছেন।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রতি বছর সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে রাজ্যের একটি জেলা পরিষদ, দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি, ও ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে পুরস্কৃত করে কেন্দ্র। পঞ্চায়েতগুলির ক্ষেত্রে অবশ্য সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি কোনও একটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের বিষয়ও বিবেচিত হয়। আবেদন খতিয়ে দেখে পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে ব্লক, পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে জেলা এবং জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসন সেরাদের নাম পাঠায় কেন্দ্রীয় স্তরে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ কমিটি মনোনয়নগুলি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার পরে পুরস্কারের জন্য ঘোষিত হয় নাম।

Advertisement

প্রশাসনের কর্তারা বলছেন— ‘সেরা হওয়ার দৌড়ে এ বারও রাজ্য থেকে বীরভূম জেলা পরিষদ রয়েছে। এ ছাড়া রাজ্যের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে জেলায় রয়েছে ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতও।’ গত দু’বার ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত কেন্দ্রীয় পুরস্কার পেয়েছে।

কাজের নিরিখে বীরভূম জেলা পরিষদ কী অবস্থায় রয়েছে, সোমবার থেকে সেই যাচাই পর্বের কাজই শুরু করেছেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। প্রশাসনের কর্তা জানান, বিভিন্ন বিষয়ক নথিপত্র, পরিকল্পনা রূপায়ণ, তদারকি ও সরকারি প্রকল্প রূপায়ণের প্রতিটি স্তরে কত ভাল কাজ করেছে জেলা পরিষদ, কোথায় ব্যতিক্রমী উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে— সে সব খতিয়ে দেখবে প্রতিনিধিদল।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে আগে পর পর দু বার পুরস্কত হয়ে সর্বভারতীয় মানচিত্রে জায়গা পেয়েছিল বীরভূম জেলা পরিষদ। এ বারও পুরস্কার পাব আশা করি।’’ একই রকম আশাবাদী অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) দীপ্তেন্দু বেরাও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব ভাল কাজ করেছি। নিয়ম মেনে একটি জেলা পরিষদের যে ভাবে কাজ করা উচিত, ঠিক সেই ভাবেই কাজ হয়েছে। তাই পুরস্কার পাওয়া এক রকম নিশ্চিত।’’

কেন এত আত্মবিশ্বাসী বীরভূম জেলা পরিষদ? সভাধিপতি বলেন, ‘‘বীরভূমে ট্যুরিজম সার্কিট তৈরির কাজে ভাল জায়গায় রয়েছে জেলা পরিষদ। বক্রেশ্বর, পাথরচাপুড়ি, কঙ্কালিতলা, এবং তারাপীঠে অনেক কাজ করছে জেলা পরিষদ। এ ছাড়া বৃদ্ধাশ্রম, প্রচুর কমিউনিট সেন্টার, রাস্তাঘাট , গ্রামীণ রাস্তায় আমূল সংস্কার, বড় সেতু তৈরি, কৃষিতে সেচের ব্যবস্থা, ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ অন্য ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে।’’

প্রশাসন জানিয়েছে, ওই প্রতিনিধিদল উন্নয়নমূলক কাজ খতিয়ে দেখা ও পর্যালোচনা তো করবেই। দেখবে বৃদ্ধাশ্রম, কমিউনিট সেন্টার ও বোলপুর ও তারপীঠে অতিথি নিবাস, ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে অন্য দফতরের সহযোগিতায় স্বনির্ভর দলের জন্য উদ্ভাবনী প্রকল্পের দিকটিও। স্থায়ী আয় দিতে পারে, জেলা পরিষদ রূপায়িত এমন প্রকল্প ও ভিন্নধর্মী কাজও নজরে থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন