পাখির টানে উৎসাহীদের ভিড় নীলনির্জন জলাধারে

নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি— এই ক’টা মাস তাঁদের জন্য আদর্শ, যাঁরা পাখি দেখতে, পাখির ছবি তুলতে ভালবাসেন। 

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১৭
Share:

পাখির খোঁজে নীলনির্জনে। নিজস্ব চিত্র

নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি— এই ক’টা মাস তাঁদের জন্য আদর্শ, যাঁরা পাখি দেখতে, পাখির ছবি তুলতে ভালবাসেন।

Advertisement

সেই পাখি দেখারই ঠিকানা রয়েছে বীরভূমে। একদিকে আদিগন্ত নীল জলরাশি। অন্যদিকে সবুজ বনভূমি। একটা শীতের সকালে নানা প্রজাতির পাখি দেখার জন্য পাখিপ্রেমীদের কাছে বক্রেশ্বর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জলাধার নীল নির্জনে ও ওই জলাধার ঘেঁষে থাকা বনভূমির থেকে ভাল জায়গা আর কী-ই বা হতে পারে! পরিবেশপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, এই সময়ই আমেরিকা, ইউরোপ, রাশিয়া, মঙ্গোলিয়া, তিব্বত, মানস সরোবর থেকে ভারতে উড়ে আসে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। বেশ কিছু প্রজাতির পাখি জেলার বিভিন্ন জলাশয়ে আস্তনা নেয়। সেই তালিকায় জেলার এই স্পটটিও রয়েছে। এই সময় স্থানীয় পাখিদেরও গতিবিধি বেড়ে যায়। ক’দিন আগেই সেই সব দেশি-বিদেশি জল ও স্থলের পাখিদের খোঁজে চষে ফেলতে দেখা গেল ছ’জনের একটি দলকে। সাত সকালেই হাজির প্রত্যেকের হাতে হাতে জুম লেন্স লাগানো ক্যামেরা, বাইনোকুলার। দলের সদস্যরা জানাচ্ছেন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৪০টির বেশি প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। সব মিলিয়ে ভালই কাটল শীতের সকাল।

পাখিপ্রেমীদের ওই দলের সদস্যরা বাইরে থেকে আসা নয়, সব সদস্যই জেলা সদর সিউড়ির বাসিন্দা। এক কিশোর-সহ তিন পড়ুয়া ও তিন চাকুরিজীবী ছিলেন। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা পরিষদের ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার অনুপ দে। দীর্ঘদিন ধরে অনুপবাবু বার্ড ওয়ার্চিং করছেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে, খড়গপুর আইআইটির গবেষক স্পন্দন দে, আদতে সিউড়ির বাসিন্দা মুর্শিদাবাদ প্রশাসনে কর্মরত সুবীর দাস, শিক্ষক দেবাশিস রায় কর্মকার, স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া প্রীতম দাস, দশম শ্রেণির ছাত্র আয়ুষ্মান সরকার। পাখি দেখার সঙ্গে ছবি তোলার শখ প্রথম পাঁচ জনেরই। আয়ুষ্মানের শখ পাখি চেনার। সকলেই জানালেন, ‘‘শুধু এ দিনই নয়, ছুটি ছাটা পেলেই এখানে আসি।’’

Advertisement

বর্তমানে জেলায় এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা রীতিমতো পাখি নিয়ে চর্চা করেন। সময় পেলেই তাঁরা ক্যামেরা বা বাইনোকুলার হাতে বেরিয়ে পড়েন পাখি দেখতে। সেই দলে পড়েন অনুপবাবুরাও। তাঁরা জানালেন, যে সব পাখি তাঁরা দেখেছেন, সেই তালিকায় দলের পাখি বড়ি হাঁস (বারহেডেজ গুজ), ব্রাহ্মণী হাঁস (রুডি শেলডাক), নর্দার্ন শোভেলার বা খুন্তে হাঁস, লেসার হুইসলিং, রাঙামুড়ি হাঁস, ইউরেসিয়ান কুট, গ্রিবের মতো পরিয়ায়ী পাখি রয়েছে। পাশাপাশি দেশজ সরাল, বালিহাঁস, নানা জাতের পানকৌড়ি, কমন কুট, জলপিপি, জলময়ূরের মতো নানা পাখিও দেখেছেন তাঁরা। স্থলের পাখির মধ্যে ছিল ব্ল্যাক নেক ওরিয়লা (কালো ঘাড় বেনে বৌ) ব্লু থ্রোট, মোহনচূড়া, ব্ল্যাক রেডস্টার্ট, ল্যাপউয়িং, হলুদ খঞ্জনের মতো নানা পাখি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন