বিষ্ণুপুরের পাটপুরে কেশবরায়ের মন্দির। ছবি: শুভ্র মিত্র।
এ বার ‘গুগ্ল ম্যাপে’ ত্রিমাত্রিক আকারে ঢুকে পড়তে চলেছে বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির ও গড়।
এর ফলে পৃথিবীর যে কোনএ প্রান্ত থেকে বসে পর্যটকেরা এই মন্দির-সহ গড়ের ‘ভার্চুয়াল ট্যুর’ করতে পারবেন। দেখতে পাবেন বাংলার পোড়ামাটির শিল্পকর্ম। এ বিষয়ে ‘গুগ্ল’ কর্তৃপক্ষের কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।
সর্বেক্ষণের পূর্বাঞ্চল বিভাগ সূত্রের খবর, সপ্তদশ শতকের গোড়া থেকে অষ্টদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত মল্লরাজাদের আমলে তৈরি বাংলার পোড়ামাটির শিল্পকর্ম ঘরে বসেই ত্রিমাত্রিক আকারে দেখতে পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে শনিবার স্থানীয় সর্বেক্ষণ বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে বিষ্ণুপুরের মোট ২০টি মন্দির-সহ গ়ড়ের ভিতরের এবং বাইরের ছবি তোলার কাজ শেষ করেছে ‘গুগ্ল’।
কিন্তু ‘গুগ্ল ম্যাপে’ কী ভাবে দেখা যাবে?
স্থানীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ সূত্রের খবর, ‘গুগ্ল ম্যাপে’ গিয়ে বিষ্ণুপুর টেরাকোটা মন্দির দিয়ে ‘সার্চ’ করলেই হবে। খুলে যাবে বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলিতে পৌঁছনোর দিক নির্দেশ-সহ ঠিকানা। আলাদা আলাদা করে দু’টি ভাগে থাকবে গড়-সহ ২০টি মন্দিরের ভিতরের এবং বাইরের পরিদর্শনের ব্যবস্থা। সর্বেক্ষণ বিভাগ সূত্রের খবর, এর ফলে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে বাংলার পোড়ামাটির কয়েকশো বছরের পুরনো ইতিহাস এবং শিল্পকলা দ্রুত পৌঁছে যাবে।
পুরাতাত্ত্বিকদের কাছে সপ্তদশ শতকের গোড়া থেকে অষ্টদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত ১৫০ বছরের রাজত্বকালে মল্লরাজাদের তৈরি এই মন্দিরগুলির স্থাপত্য ও গুরুত্ব যথেষ্ট। বিশেষ করে মন্দিরগুলির গায়ে যে পোড়ামাটির শিল্পকর্ম রয়েছে। সর্বেক্ষণ বিভাগ সূত্রের খবর, এর মধ্যে রয়েছে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে মল্লরাজা বীরহাম্বিরের তৈরি ‘রাসমঞ্চ’।
‘গুগ্ল ম্যাপে’র পাশাপাশি রাজ্যের পর্যটন দফতর এবং ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের যৌথ প্রয়াসেও বিষ্ণুপুরকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। আড়াই বর্গ কিলোমিটার জুড়ে থাকা এই মন্দিরগুলি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায়, সাধারণ পর্যটকদের অসুবিধা হয়। ঢেলে সাজানো হলে, এক মন্দির থেকে পরিবেশ বান্ধব গাড়িরও ব্যবস্থা করা হবে বলে রাজ্যের পর্যটন দফতর সূত্রের খবর। তবে সেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঘরে বসে ‘ভার্চুয়াল ট্যুরের’ ব্যবস্থা করে ফেলতে চলেছেন গুগ্ল কর্তৃপক্ষ। সর্বেক্ষণ বিভাগ এমনটাই জানিয়েছে।