যন্ত্র আছে, নেই পরিস্রুত জল

বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এমনিতেই বেশি। সুপার স্পেশালিটি চালু হওয়ার পরে সেই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রতিদিন এখানে অন্তর্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে তিনশো রোগী ভর্তি থাকেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০০:৩০
Share:

বিকল: প্রসূতি ভবনে পানীয় জলের অবস্থা। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী

পরিস্রুত পানীয় জল দেওয়ার জন্য দামি মেশিন বসানো হয়েছিল। কিন্তু তা বিকল হয়ে পড়ায় জল বন্ধ। এর জেরে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা সমস্যায় পড়েছেন।

Advertisement

বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এমনিতেই বেশি। সুপার স্পেশালিটি চালু হওয়ার পরে সেই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রতিদিন এখানে অন্তর্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে তিনশো রোগী ভর্তি থাকেন। রোগীর সঙ্গে আসা পরিজনের সংখ্যাও কম নয়। বহির্বিভাগে দৈনিক চিকিৎসা করাতে আসেন এক হাজারের বেশি মানুষ।

রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, এখানে পানীয় জলের উৎস বলতে একটি নলকূপ। নলকূপের সামনেই নিকাশি নালার জমা জলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

Advertisement

ইদানীং আবার এসএনসিইউ বিভাগের (সদ্যোজাত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র) শৌচালয়ের ট্যাঙ্ক ফুটো হয়ে সেই বিষাক্ত জল পড়ছে নলকূপের সামনেই। রোগীদের পরিবারের আশঙ্কা, তাতে ওই নলকূপের জল কতটা সুরক্ষিত তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে।

পাত্রসায়র থেকে এসেছিলেন সেখ ইয়াসিন, বিষ্ণুপুরের রামপ্রসাদ দাস, কোতুলপুরের দারাপুর থেকে এসেছেন সুশান্ত নন্দী। তাঁরা দাবি করেন, ‘‘প্রচণ্ড গরমে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ডাক্তার আসছেন ১০টা বা ১১টার নাগাদ। পুরনো ভবনের বহির্বিভাগে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে শেষ ভরসা সেই দুর্গন্ধময় পরিবেশের নলকূপ। শৌচালয়ের চেম্বার ফেটে নোংরা জল নলকূপের দিকে আসছে। সামনেই খোলা নালা। তার মধ্যেই নলকূপের জল খেতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পানীয় জলের বিকল্প ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।”

যেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্রুত জলের ব্যবস্থা করেছেন, তার কী হাল?

বছর খানেক আগে হাসপাতালের পুরনো ভবনে একটি পরিস্রুত পানীয় জলের মেশিন বসানো হয়েছিল। সেটি এখন বিকল হওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন রোগীরা। সাংসদের এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকায় ঘটা করে ঠান্ডা জলের যন্ত্র বসানো হয়েছিল। এখন তা থেকে জল পড়ে না।

শিশু ও প্রসূতি ভবনের নীচে বসানো হয়েছিল আর একটি ঠান্ডা পানীয় জলের মেশিন। সেটিও বিকল বলে জানান স্বাস্থ্য কর্মীরা। আপাতত পানীয় জল পেতে যেতে হয় রাস্তার কোনও নলকূপে।

মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “পানীয় জলের এ রকম সঙ্কট চলছে বলে আমার জানা ছিল না। খবর নিয়ে দেখছি, কী করা যায়।” এ দিকে হাসপাতাল সুপার সুব্রত রায় দাবি করেন, ‘‘সাংসদের এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকায় ঠান্ডা পানীয় জলের যন্ত্র যাঁরা বসিয়ে দিয়ে গিয়েছেন, মেরামত করার সময় তাঁদের তাঁদের হদিস পাচ্ছি না। পূর্ত দফতর যেহেতু জড়িত নয়, তাই তাঁরাও এর দায়িত্বও নেবে না। কাজেই ওই মেশিনগুলি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে প্রসূতি ভবনের নীচে বসানো মেশিনটি সারানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন