পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠন জোরদার করতে কোমর বেঁধে নেমেছে বিজেপি। শুক্রবার দুপুরে রঘুনাথপুর শহরে পঞ্চায়েত সমিতির কমিউনিটি হলে একটি কর্মিসম্মেলন হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলার সমস্ত বুথে বুথ কমিটি তৈরি করে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেওয়ার বন্দোবস্ত করে ফেলতে কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক মাস ধরেই পুরুলিয়ায় জেলা থেকে ব্লক স্তর পর্যন্ত কার্যকারিণী সভা করছে বিজেপি। এ বারে পঞ্চায়েত সমিতির নিচু স্তর পর্যন্ত পদাধিকারীদের নিয়ে সভা হল। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে দল ক্রমশ বাড়ছে। অন্য দল থেকে কর্মী সমর্থকেরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। আমরা মনে করছি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ন শক্তি হয়ে উঠবে বিজেপি। তাই নিচুস্তর পর্যন্ত সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে।”
দিলীপ ঘোষও বলেন, ‘‘দলের প্রতি সাধারন মানুষের সমর্থন বাড়ছে অন্য দল থেকে কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় প্রত্যেক কর্মীকে নিজের দায়িত্ব সুষ্ঠু ভাবে পালন করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়ির কাজ ফেলে সংগঠনের কাজে দৌড়তে হবে।’’ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি রাজ্যে দলের ক্ষমতায় আসার প্রসঙ্গ তুলে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন তিনি। শাসকদলকে বিঁধে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পরে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের অনেকেই এখন আমাদের পার্টি অফিসের সামনে লাইন দিচ্ছেন। ফোন আসছে, ‘দাদা একটু দেখবেন’ বলে।
এ দিনের সম্মেলনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, তৃণমূল ও কংগ্রেসের কিছু কর্মী সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রঘুনাথপুর বিধানসভায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার গত কয়েক বারের প্রার্থী বরুণ বাউরি, তৃণমূলের রঘুনাথপুর ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য তথা আইনজীবী সেলের সদস্য প্রবীর তেওয়ারি।
সম্মেলনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বুথ স্তরে নেতা কর্মীদের কী ভাবে কাজ করতে হবে, তার রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছেন প্রদেশ কমিটির সদস্য তথা পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক গেপাল সরকার। ভোটার তালিকা ধরে ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করে নাম বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করা, এলাকার সমস্যা বুঝে সেই মতো আন্দোলন করা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামাপদ সরকার।
এ দিন সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে আনাড়ায় বাণেশ্বর শিবমন্দিরে পুজো দেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী ও রাজ্য কমিটির সদস্য বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়।