Suvendu Adhikari

বারবার হামলার শিকার, শুভেন্দুকে বললেন সূর্যদেব

বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারী দুর্গাপুরে তাঁকে দেখতে যান। হাসপাতাল থেকে ফোনে সূর্যদেব বলেন, ‘লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে ওই আসনে শাসকদল পিছিয়ে রয়েছে।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪৭
Share:

 শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ময়ূরেশ্বরের বিজেপি নেতা সূর্যদেব ভল্লা। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সৌজন্য টুইটার kalyan.aligram@gmail.com

বিজেপি করার ‘অপরাধে' বার বার তাঁকে শাসকদলের হামলার শিকার হতে হয়েছে। শাসকদলের লোকেরা কখনও তাঁর পোল্ট্রিফার্মে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কখনও বা বেধড়ক মারধর করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছে। তবুও তিনি পার্টি ছাড়েননি। দুর্গাপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালের বেডে শুয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে এমনই অভিযোগ জানালেন বিজেপির ময়ূরেশ্বর ৪ নম্বর মণ্ডল কমিটির সদস্য সূর্যদেব ভল্লা বলে দলীয় সূত্রের খবর। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বত্রিশের সূর্যদেবের বাড়ি ময়ূরেশ্বরের কাঞ্চনা গ্রামে। বাড়িতে তাঁর বাবা শান্তিরাম এবং মা মমতা ভল্লা রয়েছেন। আরএসএস কর্মী থেকে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে সক্রিয় ভাবে বিজেপি কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে অংশ নেন সূর্যদেব। দীর্ঘদিন দলের ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লক যুব সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। বিজেপি আসার পর থেকে তাঁর উপরে পর পর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে তৃণমূলের লোকেরা সূর্যদেবকে গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ষাটপলশা পার্টি অফিসের সামনে বেধড়ক মারধর করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ২০১৯ সালে তাঁর পোল্ট্রিফার্ম পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ২০২১ সালে সূর্যদেবকে দীর্ঘদিন গ্রামছাড়া থাকতে হয় বলে বিজেপির অভিযোগ। সেই সময় তাঁর বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

এ বার সংশ্লিষ্ট ষাটপলশা পঞ্চায়েতের ২৩৯ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন সূর্যদেব। ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা বিজেপি সাংগঠনিক জেলা যুব সাধারণ সম্পাদক (বোলপুর) অনঙ্গদেব মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘পরাজয় নিশ্চিত জেনে ভোটের দিন সূর্যদেবকে ভোটকেন্দ্র থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেধড়ক মারধর করে অচৈতন্য অবস্থায় ফেলে চলে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য এলাকায় কোনও গাড়ি পর্যন্ত মেলেনি। শেষে রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারের উদ্যোগে অ্যাম্বুল্যান্স এনে তাঁকে নিয়ে যায়। রামপুরহাট থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। পরে তাঁকে দুর্গাপুরের একটি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’’

বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারী দুর্গাপুরে তাঁকে দেখতে যান। হাসপাতাল থেকে ফোনে সূর্যদেব বলেন, ‘লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে ওই আসনে শাসকদল পিছিয়ে রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য আমার উপরে নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়। ছাপ্পা দেওয়ার জন্য ভোটের দিন আমাকে বুথ থেকে বের করে নির্মম ভাবে মারধর করা হয়। আমি এখানে পড়ে রয়েছি। বাবা-মায়ের জন্য খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’’

তাঁর বাবা শান্তিরাম জানিয়েছেন , ‘‘ওর রোজগারেই সংসার চলত। এখন পার্টি আর অন্যের সাহায্যই ভরসা।’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘সূর্যদেবের মতো কর্মীরাই দলের সম্পদ। দু’র্দিনে দল সব সময়ে তাঁদের পাশে থাকবে।’’

তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট ষাটপলশা অঞ্চল কমিটির সভাপতি রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোটের দিন বা তার আগে ওই বিজেপি কর্মীর উপরে যে সব হামলার অভিযোগ উঠছে তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের কেউ জড়িতও নয়। বিজেপির ওই নেতা নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। সে জন্য ব্যক্তি আক্রোশের শিকার হয়ে থাকতে পারেন।’’ পুলিশ জানায়, ওই বিজেপি নেতাকে মারধরের অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন