কাশীপুরে মনোনয়নে বাধার নালিশ

মনোনয়ন শুরুর প্রথম দু’দিন রঘুনাথপুর মহকুমায় কোনও গন্ডগোল হয়নি। বুধবার, তৃতীয় দিনে ঝঞ্ঝাট হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাশীপুর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০০:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

মনোনয়ন তুলতে গিয়ে প্রহৃত হলেন বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি। অভিযোগের তির তৃণমূলের কর্মীদের দিকে। অন্য দিকে, ব্লকের কর্মীদের উপরে চাপ তৈরি করে তাঁদের মনোনয়নের প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া হয়, অভিযোগ সিপিএমের। বুধবার কাশীপুরের ঘটনা।

Advertisement

মনোনয়ন শুরুর প্রথম দু’দিন রঘুনাথপুর মহকুমায় কোনও গন্ডগোল হয়নি। বুধবার, তৃতীয় দিনে ঝঞ্ঝাট হল। বিজেপি-র অভিযোগ, এ দিন সকাল থেকেই ব্লক কার্যালয়ের মূল দরজার সামনে তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন শতাধিক লোকজন। বিরোধী প্রার্থীদের ভিতরেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। কেউ ফাঁক গলে চলে গেলেও সটান ব্লকের ভিতরে ঢুকে বের করে আনা হচ্ছিল।

বিজেপি-র দাবি, এ দিন সকাল সাড়ে ১১টায় ব্লকে গিয়েছিলেন মণ্ডল সভাপতি শ্যামাপদ মাহাতো। মনোনয়নপত্র তোলার আগে কিছু টাকা জমা করতে হয়। তাতে ‘ডিসিআর’ বা রসিদ মেলে। সেই কাজেই তিনি ব্লকে যান। শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘ভিতরে ঢুকতেই তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী এসে জোর করে আমাকে বাইরে নিয়ে যায়। শুরু হয় লাঠি দিয়ে মারধর। কোনও রকমে পালিয়ে বেঁচেছি।’’ তাঁর দাবি, পুরো ঘটনাটি পুলিশকে ফোনে জানিয়েছেন।

Advertisement

বিজেপি-র কাশীপুরের আর একটি মণ্ডলের সভাপতি মলয় মিশ্রের দাবি, এ দিন এলাকার জনা পনেরো কর্মী মনোনয়ন তুলতে গিয়েছিলেন। ব্লকের মূল গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দেননি। এ দিন ব্লক কার্যালয়ের বাইরে কোনও পুলিশ কর্মীর দেখা পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ বিজেপি-র। মলয়বাবু ও শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচনের নামে প্রহসন শুরু হয়েছে। আমাদের কর্মীরা যাতে মনোনয়নই তুলতে না পারেন, সে জন্য জমায়েত করছে শাসকদল।”

অন্য দিকে, সিপিএমের নেতা সুকুমার গঙ্গোপাধ্যায় আর এক কর্মীকে নিয়ে এ দিন বেকো পঞ্চায়েতের কিছু আসনের জন্য ডিসিআর আনতে ব্লকে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, সর্বদলীয় বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট নথি দেখিয়ে একাধিক আসনের জন্য থোক রসিদ তুলতে পারবে। প্রার্থী না এলেও চলবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে রসিদ আর প্রস্তাবককে নিয়ে প্রার্থী নিজে আসবেন।

সুকুমারবাবুর অভিযোগ, রসিদের নথি নেওয়ার আগেই বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া গিয়ে ব্লকের কর্মীদের প্রভাবিত করতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পুরো ঘটনা বিডিও-কে জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলাম। কিন্তু বিধায়কের চাপে ব্লকের কর্মীরা আমাদের ডিসিআর দেননি। শেষ পর্যন্ত জমা দেওয়া টাকা ফেরত নিতে হয়েছে।’’ বিডিও (কাশীপুর) মানসী ভদ্র চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থী বা প্রস্তাবককে নিজে এসে ডিসিআর নিতে হবে। এ দিন যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।’’

তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, কাশীপুরের বিভিন্ন গ্রামপঞ্চায়েত থেকে তাঁদের প্রার্থীরা এ দিন মনোনয়ন তুলতে ব্লকে গিয়েছিলেন। প্রার্থীদের সঙ্গে ছিলেন প্রস্তাবক ও প্রচুর কর্মী সমর্থক। সেটাকেই বিরোধীদের মনে হয়েছে জমায়েত। তাঁর আরও দাবি, ১৪৪ ধারা মেনে ব্লক থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে সমর্থকেরা দাঁড়িয়েছিলেন। সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘আমরা এখন নিজেদের মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত। বিরোধীদের কে মনোনয়ন তুলতে পারছেন না সেটা দেখার মতো সময় আমাদের নেই। ওঁরা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেন না বলে আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন।”

বিডিও (কাশীপুর) জানিয়েছেন, ব্লক কার্যালয়ের সামনে জমায়েত বা মনোনয়নে বাধা দেওয়ার কোনও অভিযোগ তাঁদের কাছে আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন