সম্মান: ঝালদায় শনিবার। নিজস্ব চিত্র
ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখলের পরে লেনিনের মূর্তি ভাঙা নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিয়োগ তুলে সারা দেশ জুড়ে তোলপাড় চলছে। কিন্তু পুরুলিয়ার ঝালদায় দেখা গেল ঠিক তার উল্টো ছবি। স্থানীয় কিছু লোকজনকে নিয়ে ঝালদা শহরের মনীষীদের মূর্তি পরিষ্কারে নামলেন বিজেপি যুব মোর্চার স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। শুধু তাই নয়, তাঁরা শপথ নিলেন মর্যাদার সঙ্গে মূর্তিগুলি রক্ষার।
এ দিন বিজেপি যুব মোর্চার উদ্যোগে চকবাজারের মহাত্মা গাঁধীর মূর্তি, মায়া সরোবর রাস্তায় সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি ও পুরসভার অদূরে স্বাধীনতা সংগ্রামী সত্যকিঙ্কর দত্তের আবক্ষ মূর্তি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। বিজেপি যুব মোর্চার তরফে রাজেশ রায় বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় মনীষীদের মূর্তির উপরে আঘাত নেমে আসছে। এটা কোনও ভাবেই আমাদের দেশের সংস্কৃতি নয়। আমরা মনীষীদের শ্রদ্ধা করি। এটাই আমাদের পরম্পরা। অথচ কলকাতা, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বাবাসাহেব অম্বেডকরের মূর্তি আক্রান্ত হয়েছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি রাখছি, যাঁরা এমন ন্যক্কারজনক ও ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হোক।’’ তিনি জানান, মনীষীদের মূর্তিগুলি শ্রদ্ধার সঙ্গে রক্ষা করা দরকার। এই বার্তা দিতেই তাঁরা এ দিন মূর্তিগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই বার্তা দিয়েছেন।
তাঁর দাবি, ‘‘তবে এ দিনের এই কর্মসূচি আমাদের দলীয় কর্মসূচি নয়। কারণ ঝালদার মূর্তিগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার এই উদ্যোগ আমরা নিলেও অরাজনৈতিক ভাবে এই কাজ করেছি।’’
কিন্তু ত্রিপুরার নির্বাচনী ফল প্রকাশের পরে তো সেখানে লেনিনের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে ক্ষমতায় আসা শাসক দলের মদতপুষ্ঠ লোকজনের দিকে। এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কি সেই অভিযোগের অভিমুখ ঘোরাতে? রাজেশবাবু দাবি করেন, ‘‘ওই ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে, প্রমাণিত হয়নি। তাঁরা বিজেপির মদতপুষ্ট কি না, সেটাও স্পষ্ট নয়। আমরা ওই ঘটনারও তীব্র নিন্দা করছি। যাঁরা দোষী তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
যদিও তৃণমূল এই ঘটনাকে নাটক বলেই কটাক্ষ করেছে। ঝালদা শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘এটা তো নাটক। এ ছাড়া আর কী ই বা বলা যায়! এঁরা নিজেরাই ত্রিপুরায় লেনিনের মূর্তি ভাঙছে, আবার এখানে মূর্তি পরিষ্কার করছে!’’