West Bengal Municipal Election 2020

ব্লিচিং-স্প্রে বদ্ধ নালায়, মশা বহাল

শহর ঘুরলে পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডেই নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটিতে ছোট বড় সমস্ত নালাগুলিতে জমা জলে মশার ডিম দেখতে নজরে পড়বে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০২:০৮
Share:

এখানেই বসানো হয়েছিল পাম্প। বসানোর পরেই পুড়ে যায়। নিজস্ব চিত্র

দৃশ্যটা রামপুরহাট শহরের বাসিন্দাদের চেনা। মাঝে মাঝেই পুরসভার উদ্যোগে নিকাশি নালাগুলিতে মশা তাড়াতে ধোঁয়া স্প্রে ও ব্লিচিং ছড়াতে দেখা যায়। কিন্তু তাতে বাড়িতে মশার হানা কমে না। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এর কারণ পুরসভা তৎপর হলেও গলদ রয়েছে গোড়াতেই। নিকাশি নালাগুলিতে দিনের পর দিন জমে থাকে জল, তার জেরেই মশার আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে সেগুলি। তাই নিকাশি নালার জমা জল সরাতে উদ্যোগী না হলে মশার সমস্যা মিটবে না বলেই মনে করেন তাঁরা।

Advertisement

শহর ঘুরলে পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডেই নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটিতে ছোট বড় সমস্ত নালাগুলিতে জমা জলে মশার ডিম দেখতে নজরে পড়বে। আবার নিকাশি নালা গুলিতে প্লাস্টিক নোংরা আবর্জনা জমে থাকার জন্য জমা জল সরতে চায় না। রামপুরহাট পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গাঁধী পুকুরের পাড়ে বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন তৈরি হওয়ার পর ঘর বিলি হয়েছে। মাটি দিয়ে তৈরি ছিটেবেড়া, খড় বা টিনের ছাউনি, মাটির দেওয়ালের ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাড়ি ভাঙা হলেও নিকাশি নালাগুলি সংস্কার হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ ছ’মাসে একবার নালা পরিস্কার হয়। কোটি টাকা খরচ করে রামপুরহাট শহরের ১, ৩, ৪, ৭, ১৬, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে যাওয়া কাঁদর সংস্কার করা হলেও নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাকলামাঠ এলাকার কাঁদর পাড় সংলগ্ন এলাকা জলমগ্ন হয়।

এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, পুরসভার পক্ষ থেকে যথার্থ্য সময়ে বছরে বিভিন্ন সময়ে ব্লিচিং ছড়ানো থেকে মশা নিধনে স্প্রে করা হয়। কামান দেগে ধোঁয়াও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কাজ হয় না। বাসিন্দাদের কথায়, ‘‘ব্লিচিং দেওয়া বা স্প্রে করা ভাল উদ্যোগ। কিন্তু যেখানে নিকাশি ব্যবস্থা ত্রুটিতে ঘরে জল ঢুকে যায়, এলাকার মানুষ জল বন্দি হয়ে পড়ে, নিকাশি নালার জমা জলে মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে সেখানে মাঝে মাঝে এলাকায় এলাকায় ব্লিচিং বা মশা নিধন প্রতিষেধক স্প্রে করে কী হবে?’’

Advertisement

নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটিতে সামান্য বৃষ্টিতে রামপুরহাট ছ’ফুঁকো রেলসেতুর নীচে জল জমে যায়। বর্ষাকালে অতি বর্ষণে জল জমে যাওয়ার ফলে এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বাসিন্দারা। জল জমে যাওয়ার জন্য যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়ে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিশাঁড়া পাড়ার এক বাসিন্দা জানালেন, ‘‘বাড়ির কাছে নিকাশি নালাতে দীর্ঘদিন ধরে জল জমে আছে। ডাস্টবিনের অভাবে নোংরা আবর্জনার পচা গন্ধে টেকা যায় না। সেখানে কেবলমাত্র ব্লিচিং আর স্প্রে করে অনর্থক টাকা খরচ করা হয়।’’

পুর-কতৃপক্ষের অবশ্য দাবি, শহরের নিকাশি সমস্যা সমাধানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি বলেন, ‘‘রামপুরহাট পুরসভা এলাকায় জল নিকাশির জন্য কোনও পরিকল্পনা এর আগের কোনও পুরবোর্ড গ্রহণ করে নি। ২০১৫ সালে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা এলাকার জাতীয় সড়কের ধারে মহানালা সংস্কার করেছে। শ্রীফলা থেকে সুন্দিপুর যাওয়ার নিকাশি নালা তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি করেছে। কাঁদর পাড় পাথর দিয়ে বাঁধানো থেকে কাঁদর সংস্কার করা হয়েছে। এর ফলে আগের থেকে শহরে অনেক কম জল জমে। জমা জল বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না।’’

পুরপ্রধানের আশ্বাস, লোটাস প্রেস মোড় এলাকার জল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য অত্যাধুনিক পাম্পসেট বসানো হবে। এ ছাড়া শহরের নিকাশি নালার ব্যবস্থার যেখানে সমস্যা আছে সেখানে খুব শীঘ্রই নিকাশি নালা নির্মাণ বা সংস্কার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন