আয়েষা পটুয়া। নিজস্ব চিত্র
জন্ম থেকে দু’চোখেই দৃষ্টি নেই। আলোর রং কী সে জানে না। তবু স্কুলকে অন্য রকম আলোয় ভরিয়ে দিয়েছে আয়েষা পটুয়া। প্রতিবন্ধকতা জয় করে এ বারে আমোদপুর জয়দুর্গা বালিকা বিদ্যালয় থেকে ৪৩৪ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।
সাঁইথিয়ার কুসুমযাত্রা গ্রামে অভাবের সংসার আয়েষাদের। বাবা সমীর পটুয়া রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর যৎসামান্য বেতনের উপরেই চলে আয়েষা এবং তার ভাইয়ের পড়াশোনা-সহ ৬ সদস্যের সংসার। আয়েষা জন্ম থেকেই দু’চোখে দেখতে পায় না। তবু অন্যের কাছে থেকে শুনে শুনে পড়াশোনা রপ্ত করে। লেখক নিয়ে এ বার মাধ্যমিক পাশ করেছে সে। তাকে ওই ভাবে পড়া মুখস্থ করিয়েছেন গ্রামেরই এক ছাত্রী পল্লবী মাল এবং স্থানীয় আমোদপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের স্পেশ্যাল এডুকেটর তারকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলা বিভাগে পড়াশোনা করে তারই মতো দৃষ্টিহীনদের শিক্ষিকা হতে চায় আয়েষা। অতদূর মেয়েকে কী করে পৌঁছে দেবেন তা জানেন না সমীরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অভাবের সংসার। মেয়ের জেদ আর অন্যের সহযোগিতায় মেয়েকে এত দূর পড়াতে পেরেছি। এরপর কী হবে ভেবে চরম দুঃচিন্তায় পড়েছি।’’
আয়েষার অবশ্য মনোবলে একটুও চিড় ধরেনি। সে জানায়, ‘‘আমি দৃষ্টিহীনদের স্কুলেরই শিক্ষিকা হতে চাই।’’