এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
জেলা তৃণমূলের এক নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল মহম্মদবাজারের হিংলো পঞ্চায়েতে। বাড়ির পাশের দলীর কার্যালয়ে ওই নেতার মাথা চাই বলে পোস্টারও পড়ে। গোটা ঘটনা জানিয়ে বুধবার মহম্মদবাজার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জেলা কমিটির সদস্য কালীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কালীপ্রসাদের কথায়, ‘‘দলের এক কর্মী খুনের ঘটনায় আমি অন্যতম সাক্ষী। তাই আমাকে সরিয়ে দিতেই মঙ্গলবার রাতে পরিকল্পিত ভাবে ওই বোমাবাজি করা হয়েছে।’’ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ বুধবার সকালে কয়েক জনের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। তদন্তে যান মহম্মদবাজারের ওসি, ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) আনন্দ সরকার-সহ পুলিশ কর্মীরা। সংগ্রহ করা হয় বোমের নমুনা। ছিঁড়ে ফেলা হয় হুমকি পোস্টারও। তবে রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালীবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত দীপক পাল নামে সারেণ্ডা গ্রামের এক তৃণমূল কর্মীকে গত বছরের ২৬ নভেম্বর ২০১৫ রাত্রে গ্রামেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। ওই খুনের ঘটনায় দীপকের স্ত্রী শান্ত্বনাদেবী গ্রামের ছয় মহিলা-সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ ছয় মহিলা-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে। বাকি ছয় অভিযুক্ত এখনও ফেরার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দীপক খুনের পরে অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবিতে সরব হন কালীপ্রসাদ। তা মানছেন এই তৃণমূল নেতাও। তাঁর কথায়, ‘‘তাতেই দুষ্কৃতীদের রাগ আরও বাড়ে।’’ এ দিকে, অভিযুক্ত মহিলারা আগে জামিন পেলেও দিন কুড়ি আগে কলকাতা হাইকোর্টে থেকে শর্তসাপেক্ষ জামিনে ছাড়া পান অন্য অভিযুক্তরা। পুলিশ সূত্রের খবর, উচ্চ আদালতের শর্ত রয়েছে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল যে মহকুমায় অর্থাৎ সিউড়িতে ঢুকতে পারবেন না। শুধু আদালত সংক্রান্ত কাজে সিউড়ি যেতে পারবেন। যে এলাকায় তাঁরা থাকবেন, সংশ্লিষ্ট সেই থানায় সপ্তাহে চার দিন হাজিরাও দিতে হবে। কিন্ত জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে তাদের গ্রামের আশপাশে ঘুরতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি অনেকের। মঙ্গলবার ঠিক কী হয়েছিল?
কালীপ্রসাদ জানান, রাত দশটা নাগাদ বাড়ির সামনে দু’টি বোম পড়ে। বিকট আওয়াজে বেরিয়ে এসে দেখি চার দিকে ধোঁয়া। তারপরেই বাড়ির কাছের দলীয় কার্যালয়ের দরজা একটি পোস্টার নজরে আসে। তাতে লাল কালিতে লেখা ছিল ‘কালির মাথা চাই’।