সতর্কবাণী: এই রেলসেতুতেই দুর্ঘটনাটি হয়। নিজস্ব চিত্র
ফের নিজস্বী তোলার খ্যাপামির মাসুল দিল এক ছাত্র। গুরুতর জখম অবস্থায় আপাতত তার ঠাঁই হয়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের বেডে।
রবিবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের বিড়াই নদীর রেলসেতুতে নিজস্বী তুলতে গিয়েছিল সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া বিষ্ণুপুর মহকুমা স্কুলের ছাত্র, বছর সতেরোর শেখ ইরফান। সঙ্গে ছিল আরও তিন বন্ধু। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রবিবার বিকেলে চার কিশোরকে রেল সেতুর ট্র্যাক ধরে ফোন হাতে চলাফেরা করতে দেখেছেন তাঁরা। সেই সময়ে হাওড়াগামী রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস চলে আসে। অন্য বন্ধুরা সরে গেলেও নিজস্বী তোলার নেশায় ইরফান ব্যাপারটা খেয়ালই করেনি। একেবারে ঘাড়ের কাছে ট্রেন চলে আসার পরে টনক নড়ে। ভয়ে তখন ওই কিশোর প্রায় তিরিশ ফুট নীচের নদীতে ঝাঁপ দেয়।
নদীতে অল্প জল রয়েছে। পড়ে গুরুতর আহত হয় ওই কিশোর। সামনের একটি ইটভাটার কর্মীরা তাকে উদ্ধার করেন। ইটভাটার কর্মী সমীরণ অধিকারী জানান, অচৈতন্য অবস্থায় ইরফানকে উদ্ধার করে ইটভাটার গাড়িতে করে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক শৈবাল বেরা জানান, ওই কিশোরের কোমরের হাড় ভেঙে গিয়েছে। কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার সেখান থেকে ওই কিশোরকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। ইরফানের শেখ ইদরিশ এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যাল চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ওর খামখেয়ালি নেশায় আমাদের কী অবস্থা হল!’’
ওই রেল সেতুর কাছের ইটভাটাটির মালিক সুকান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘আগেও অনেক বার এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকী প্রাণও গিয়েছে। নজরদারির প্রয়োজন।’’ বিষ্ণুপুর স্টেশন ম্যানেজার অঞ্জনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ক্রমাগত প্রচার চালাই রেল লাইনের দিয়ে হাঁটা, ছবি তোলা ঝুঁকিপূর্ণ বলে। তবু মানুষের হুঁশ ফেরে না। বিড়াই সেতুর উপরে সতর্ক করে বোর্ড দেওয়া রয়েছে।’’ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া ছাত্র সেই সমস্ত কিছুর পরেও এই খ্যাপামো করতে যাওয়ায় বিস্মিত তাঁরা। অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সেতুর উপরে সব সময়ে প্রহরী বসিয়ে রাখা তো সম্ভব নয়। মানুষকেই আরও সচেতন হতে হবে।’’