ছাই ইট বানিয়ে নিজেই কিনবে প্রশাসন

স্থানীয় বাবা তিলকা মুর্মু ল্যাম্পস-সহ এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এই প্রকল্প বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। বিডিও (রঘুনাথপুর ২) সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাই ইটের কারখানাটিকে আরও বেশি পরিবেশবান্ধব করতে কারখানার পাশে ফলের বাগান ও বনসৃজন করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৬:২০
Share:

উদ্বোধন: রঘুনাথপুরে। নিজস্ব চিত্র

একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ছাই ইট তৈরির কারখানা চালু হল রঘুনাথপুর ২ ব্লকে। রবিবার রাজ্যের মধ্যে দ্বাদশ এবং পুরুলিয়ায় প্রথম ওই কারখানার উদ্বোধন করেছেন রাজ্যর পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ও একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার। আদিবাসীদের ল্যাম্পসের সদস্যদের ও আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম প্রতাপপুরের সামগ্রিক উন্নয়নে ওই প্রকল্প ভবিষ্যতে সহায়ক ভূমিকা নেবে বলে দাবি ব্লক প্রশাসনের।

Advertisement

স্থানীয় বাবা তিলকা মুর্মু ল্যাম্পস-সহ এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এই প্রকল্প বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। বিডিও (রঘুনাথপুর ২) সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাই ইটের কারখানাটিকে আরও বেশি পরিবেশবান্ধব করতে কারখানার পাশে ফলের বাগান ও বনসৃজন করা হয়েছে। পুরো কাজটাই করেছেন প্রতাপপুর গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আদিবাসী মহিলারা।” কারখানার পাশেই ফলের বাগান ও বনসৃজনের কাজ দেখে এই ধরনের প্রকল্পকে মডেল হিসাবে অন্য জেলাতেও চালু করার হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনার দিব্যেন্দুবাবু।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের এই প্রকল্পে একশো দিনের কাজ মূল হলেও এই আর্থিক সাহায্য মিলেছে চতুর্দশ অর্থ কমিশন, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ এবং বিইইউপি থেকে। পাশাপাশি তাদের সিএসআর প্রকল্পে সাহায্য করেছে এলাকার দুই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র— রাজ্যর সাঁওতালডিহি তথা এসটিপিএস এবং ডিভিসি-র আরটিপিএস। খরচ হয়েছে কমবেশি সাড়ে ৪৩ লক্ষ টাকা।

Advertisement

বিডিও জানান, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বাগান ও বনসৃজন হবে। প্রতাপপুরের আদিবাসী সম্প্রদায়ের চারটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জনা পঞ্চাশ মহিলাকে বছরে গড়ে একশো দিনের কাছাকাছি কাজ দেওয়া হয়েছে সেখানে। অন্য দিকে ছাই ইট কারখানা শুরু হলে তার সমস্ত তত্ত্বাধান করবে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের আদিবাসীদের বাবা তিলকা মুর্মু ল্যাম্পস। প্রশাসন সূত্রের খবর, ছাই ইট কারখানায় তিন হাজার কর্মদিবস তৈরি হবে। প্রথম দিকে প্রায় ১২০ জন শ্রমিক লাগবে। ল্যাম্পস-এর সদস্যরাই শ্রমিকের কাজ করবেন। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে তাদের মজুরি দেওয়া হবে। পরে ইট বিক্রি করে পাওয়া লভ্যাংশের বেশির ভাগটাই পাবে ওই ল্যাম্পস।

বিদ্যুৎকেন্দ্রর বর্জ্য ছাই (ফ্লাই অ্যাশ), জিপসাম, চুন ও বালি— এই চার উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় ছাই ইট। বিনামূল্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি ছাই দেবে। তবে ছাই বহন করার খরচ দিতে হবে প্রশাসনকে। আপাতত চার লক্ষ ইট তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নামছে প্রশাসন। যা উৎপাদন হবে তার পুরোটাই সরকারি প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হবে। বিভিন্ন আবাস যোজনা, রাস্তা, স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মাণে ছাই ইট ব্যবহার করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রশাসনের প্রকল্পে প্রশাসনই ক্রেতা হওয়ায় সমস্যা হবে না।’’

এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউড়ি, জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত, রঘুনাথপুর মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায়, রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনীষা ঘোষ ও পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সীমা বাউড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন