Badudeb Acharia

জন্মদিনে উপহার চান ট্রেন

বিভিন্ন মহলে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে, রেল আর বাসুদেব আচারিয়া ছিলেন কার্যত সমার্থক।

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

 আদ্রা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫২
Share:

রেল কর্মীদের পাশে। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রে তখন ইউপিএ ১-এর সরকার। বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস-সহ সহযোগী দলগুলি দেশ চালাচ্ছে। রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। রেলের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সিপিএমের বাঁকুড়ার সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। লালুপ্রসাদের সঙ্গে বাসুদেবের সখ্যতা ছিল সর্বজনবিদিত। বাসুদেবকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করতেন লালুপ্রসাদ। একবার বাসুদেবকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে লালুপ্রসাদ কী উপহার দেবেন জানতে চান। প্রত্যুত্তরে সিউড়ি-হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব রেলমন্ত্রীকে দিয়েছিলেন বাসুদেব। তখন সিউড়ি-হাওড়া সরাসরি কোনও এক্সপ্রেস ট্রেন ছিল না। নিরাশ করেননি লালুপ্রসাদ। বাজেটের পরে ‘হুল এক্সপ্রেস’ পেল বীরভূম।

Advertisement

বিভিন্ন মহলে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে, রেল আর বাসুদেব আচারিয়া ছিলেন কার্যত সমার্থক। স্টিম ইঞ্জিন উঠে যাওয়ার পরে বাসুদেবের নেতৃত্বে ছাই ও কয়লা শ্রমিকদের পুনর্বাসনের আন্দোলনই তাঁকে রেল শ্রমিক নেতার পরিচিতি দিয়েছিল। ১৯৭৪ সালে গ্রেফতার হন। তবে রেলের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে তিনি পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার বেশ কিছু রেল প্রকল্পের অনুমোদন করিয়েছেন। আদ্রা ও পুরুলিয়া স্টেশনের উন্নীতকরণ, জয়চণ্ডীপাহাড় রেল স্টেশনকে কোচবিহারের রাজবাড়ির আদলে তৈরি করা, পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম রেলপথের সমীক্ষা, বাঁকুড়া-সোনামুখী বিডিআর রেলকে ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে রূপান্তর করা, ছাতনা থেকে মুকুটমণিপুর রেলপথ তৈরির উদ্যোগ-সহ নানা কাজে তাঁর অবদান রয়েছে। যদিও তার কিছু প্রকল্প এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।

রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকার শিল্পায়নেও বাসুদেবের ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না। রাজ্য রাজনীতি যখন সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ ঘিরে উত্তাল, সে সময় বিরোধী তৃণমূলকে এলাকার শিল্পায়নের প্রাসঙ্গিকতা বুঝিয়ে একপ্রকার নির্বিঘ্নে রঘুনাথপুরে জমি অধিগ্রহণের কাজ উদ্ধারে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তৎকালীন সাংসদ বাসুদেব। বারবার বৈঠকে বসে মিটিয়েছেন জমির ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত নানা সমস্যা। সেই জমিতেই গড়ে উঠেছে ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাকি জমিতে বর্তমান তৃণমূল সরকার শিল্পায়নের কাজ করছে।

Advertisement

সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘শুধু জমির মালিকেরাই নয়, নথিভুক্ত নয় এমন পাট্টাদার, বর্গাদাররাও যাতে ক্ষতিপূরণ পান, তা-ও নিশ্চিত করেছেন উনি।’’ তৃণমূলের রঘুনাথপুর শহর সভাপতি বিষ্ণুচরণ মেহেতাও মানছেন, ‘‘বাসুদেববাবু মুখে নয়, এলাকার শিল্পায়নের প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে কাজে তা দেখিয়েছিলেন।আমরাও চেয়েছিলাম রঘুনাথপুরে শিল্পের খরা কাটুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন