আস্তাকুঁড়: আবর্জনা সাফাই অনিয়মিত হয়ে পড়ায় এমনই হাল পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। ছবি: সুজিত মাহাতো
মাত্রাছাড়া প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে এ বার সচনেতনতার পথে নামল পুরসভা। সম্প্রতি পুরুলিয়া পুরসভার কাউন্সিলর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটির সদস্যেরা প্লাস্টিক মুক্ত পুরুলিয়া গড়ে তোলার আহ্বান নিয়ে শহর পরিক্রমা করেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই পুরসভার সাফাই বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নাগরিকদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, শহরের হাতে গোনা কয়েকটি এলাকায় সাফাই হলেও বেশির ভাগ জায়গাতেই আবর্জনা নিয়মিত সাফাই হচ্ছে না। কোথাও দিনের পর দিন ডাঁই হয়ে থাকছে আবর্জনার স্তূপ। গত বছর ঘণ্টা দেড়েকের বৃষ্টিতে শহরের বেশ কিছু এলাকায় রাস্তায় জল জমতেও দেখেছেন পুরবাসী। ডেঙ্গি মোকাবিলায় শহরে পরিচ্ছন্নতার উপরেই জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কোথাও যাতে জল না জমে সে জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বৈঠক করে পুরসভার সাফাই কর্মীদের সতর্ক করেছেন।
কিন্তু পুরসভার সাফাই কর্মীদের অভিজ্ঞতা, শহরের নিকাশি নালাগুলি প্লাস্টিক আর থার্মোকলে প্রায় বুজে গিয়েছে। সে কারণে জল জমে থাকছে। শহরের প্রবীণ বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, এই শহর সাধারণত বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয় না। কিন্তু নালা প্লাস্টিকে ভরে যাওয়ায় গত বছর জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল পথঘাট।
এ দিকে, পুরসভা কোথাও র আবর্জনা ফেলতে গেলেই জমির মালিকেরা প্লাস্টিক মেশানো জঞ্জাল সেখানে ফেলা যাবে না বলে জানিয়ে দেন। পুরসভার সাফাই বিভাগের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল কৃষ্ণেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘এমতাবস্থায় শহরের বেশির ভাগ জায়গা থেকে আবর্জনা তোলা মুশকিল হয়ে পড়েছে।’’ ফলে পুরসভার সামনে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে পথে নামা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কৃষ্ণেন্দুবাবু জানান, প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিকগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরে তাঁরা শহরবাসীকে সচেতন করতে প্রচার চালানো শুরু করেছেন।
পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘প্লাস্টিক নষ্ট হয় না। এতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই নিজেদের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সবারই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা উচিত।’’ তিনি জানান, প্লাস্টিক বন্ধে প্রয়োজনে তাঁরা জরিমানা করার কথা ভাববেন।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘প্লাস্টিক মাটির সঙ্গে মেশে না। তা ছাড়া প্লাস্টিকের নানা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো উচিত।’’