গরু ফেলে চম্পট দিল চোরের দল

খড়ের চাল, মাটির বাড়ি। এক চিলতে উঠোন। ওপাশে গরুর ছাউনি। চাঁদের আলো এসে পড়েছে ছাউনিতে। রোজকার মতো সেখানেই শেখ মোজাম বেঁধে রেখে ছিলেন গরুগুলো। ঘুমোতে যাওয়ার আগে, রাতের মতো খোল-ছানি দিয়ে টর্চ মেরে পরখ করতেও ভোলেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৭
Share:

খড়ের চাল, মাটির বাড়ি। এক চিলতে উঠোন। ওপাশে গরুর ছাউনি। চাঁদের আলো এসে পড়েছে ছাউনিতে।

Advertisement

রোজকার মতো সেখানেই শেখ মোজাম বেঁধে রেখে ছিলেন গরুগুলো। ঘুমোতে যাওয়ার আগে, রাতের মতো খোল-ছানি দিয়ে টর্চ মেরে পরখ করতেও ভোলেনি। দড়ি হয়তো ঠিকই বেঁধেছিল, বুধবার রাতে সেই দড়ি খুলেই তিনটি গরু নিয়ে চোরেরা চম্পট দেয়! মোজামদের তখন মাঝরাত। ঘুমিয়ে সাঁইথিয়ার মাঠপলশা এলাকার রোঙ্গাইপুরও।

গরু ব্যবসায়ী মোজামের ছেলে, বউ ঘুমে। সারা দিন ঘোরাঘুরি, গরু নিয়ে এ হাট-ও হাট। উঠোনের চালায় বাঁধা ছিল তাঁর সাতটি গরু। হঠাৎ ঘুমের মধ্যেই বেজে উঠল মোজামের বড় ছেলে সোলেমানের মোবাইল। জানাজানি তখনই! ‘‘বড় সর্বনাশ হয়ে গেল আমার। সাতটা গরু বাঁধা ছিল। ভাগ্যিস সবগুলো নিয়ে যায়নি। তিনটে নিয়ে খুলে পালাচ্ছিল। চোরেরা ট্রাকে গরু তুলছে সেটা দেখতে পেয়েই তো ছেলেকে ফোনে খবর দেয় নিজাম,’’ বলছিলেন মোজাম।

Advertisement

মাঝরাতে তাঁর বাড়ির সামনে ট্রাকে গরু চাপানো দেখেই সন্দেহ হয় পড়শি নিজামের।

সঙ্গে সঙ্গে মোজামের ছেলে সোলেমানকে খবর দেন মোবাইলে। সোলেমান বিপদ বুঝে তেড়ে ফুড়ে ওঠে। বাবাকে ডেকে তোলে। জাগিয়ে তোলে পাড়ার লোকেদের। আর পুলিশেও ফোন করে দেয়। বেরিয়ে পড়ে মোটরবাইকে ট্রাকের পিছু ধাওয়া করে। খবর যায় সাঁইথিয়া থানাতেও। পুলিশ সংযোগকারী রাস্তায় ট্রাফিক রোলার লাগিয়ে দেয়। সোলেমান বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা সাঁইথিয়া মহম্মদবাজার রাস্তা ধরে পালানোর সময় পুলিশে ট্রাফিক রোলারে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। পুলিশ কর্মী ও আমরা পিছু না ছাড়ায় শেষ পর্যন্ত বাগডোলা মোড়ের কাছে গরু তিনটিকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। তাতে তিনটি গরু জখম হয়েছে। একটি গরুর পা ভেঙে গেছে।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ ইউনুস বলেন, ‘‘মোজাম ওই গাড়ির নম্বর দিয়ে অভিযোগ করেছেন।’’ পুলিশ জানায় গাড়ি মালিকের খোঁজ চলছে।

বৃহস্পতিবার উঠোনে বসে সামনের চালার দিকে তাকিয়ে ছিলেন মোজাম। মশার জন্য ধোঁওয়া দিয়েছেন কেউ। বলছিলেন, ‘‘যে ক’দিন ওরা থাকে, সে ক’দিনেই মায়া পড়ে যায়!’’

সন্ধে সন্ধে চাঁদের আলো এসে পড়েছে শেখ মোজামের খড়ের চালে। নীচে দাঁড়িয়ে ভাঙা পায়ে দিব্যি লেজ নাড়ছিল গরুটা!

কারখানায় বিক্ষোভ। বোনাস বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলেন শ্রমিকেরা। তা না মেনে উল্টে বেতনের দিনই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমনই অভিযোগ তুলে কারখানার সামনে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার মুরারই থানার রাজগাঁও স্টোন কোম্পানি কারখানার ঘটনা। এসইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র ব্যানারে ওই বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য আয়েসা খাতুনের দাবি, ‘‘প্রতি বৃহস্পতিবার কোম্পানি থেকে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়। অথচ এ দিনই মালিকপক্ষ কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক বেতন পেলেন না।’’ ওই কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরেই তাঁরা মালিকপক্ষের কাছে বোনাস বৃদ্ধির দাবি করছিলেন। তার পরেই এই ঘটনা। ২৪ ঘণ্টা দেখে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন ওই শ্রমিকেরা। আজ শুক্রবার এসডিও-র (রামপুরহাট) সঙ্গে শ্রমিকেরা দেখা করবেন বলে জানা গিয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন