বাঁকুড়ায় ক্লাসঘরে পাখা খুলে পড়ে চোট ছাত্রীর

রাজশ্রী জানায়, ক্লাসরুমের মাঝামাঝি জায়গায় ছিল পাখাটি। ওই পাখার তলার বেঞ্চেই সে কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে বসে। কয়েকদিন ধরেই পাখা চললেই শব্দ হচ্ছিল। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সে বলে, “কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাথায় জোর লাগল। সবাই ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠল।’’ ঘটনায় আঙুলে চোট পেয়েছে রাজশ্রীর আর এক সহপাঠীও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০২:৪৬
Share:

রাজশ্রী সোরেন। নিজস্ব চিত্র

মাথার উপরে সিলিং ফ্যানে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দটা কয়েক দিন ধরেই বেশ বেড়ে উঠেছিল। ক্লাসঘরে পাখার নীচেই বসার জায়গা ওর। সহপাঠীরা ঠাট্টা করে বলত, ‘‘পাখাটা এক দিন তোর মাথাতেই পড়বে।’’ হলও তাই। বুধবার বাঁকুড়ার কমরার মাঠ এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের ক্লাসঘরে ক্লাস চলাকালীনই আচমকা খুলে পড়ল পাখা। অল্পের জন্য রক্ষে পেয়েছে ওই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী বাঁকুড়ার লালবাজার বাগদি পাড়ার বাসিন্দা রাজশ্রী সোরেন। পাখার ব্লেডের আঘাতে তার মাথার একটু অংশ চিরে গিয়েছে। ঘটনার পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজশ্রীকে শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে পাঠালে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

তবে সহপাঠীদের চোখে যে ব্যাপারটা পড়েছিল, স্কুল কর্তৃপক্ষের কানে সেটা কেন ধরা পড়ল না— সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় ট্রাক চালক রামেশ্বর সোরেন। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। প্রতি মাসে বিভিন্ন খাতে টাকা নেওয়া হলেও ছাত্রছাত্রীদের প্রাথমিক সুরক্ষার দিকে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ যথাযথ নজর দেয় না বলে তাঁর অভিযোগ। রামেশ্বর বলেন, ‘‘ঘটনার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের সরাসরি কিছুই জানায়নি। মেয়েকে নার্সিংহোমে পাঠিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েই দায় সারা হয়েছে। এর জেরে গভীরে কোনও চোট লেগেছে কি না তার কোনও পরীক্ষাই করানো হয়নি।’’

রাজশ্রী জানায়, ক্লাসরুমের মাঝামাঝি জায়গায় ছিল পাখাটি। ওই পাখার তলার বেঞ্চেই সে কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে বসে। কয়েকদিন ধরেই পাখা চললেই শব্দ হচ্ছিল। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সে বলে, “কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাথায় জোর লাগল। সবাই ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠল।’’ ঘটনায় আঙুলে চোট পেয়েছে রাজশ্রীর আর এক সহপাঠীও।

Advertisement

যদিও ওই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই ব্যাপারে বক্তব্য, ‘‘কিছুই হয়নি।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘গলায় সংক্রমণের জন্য স্কুলে যাইনি। কিছু ঘটলে নিশ্চয় জানতে পারতাম।’’

ঘটনা হল, জেলা জুড়েই বেসরকারি স্কুলের রমরমা। তবে এই সমস্ত স্কুলের পরিকাঠামোর উপরে প্রশাসনের নজরদারি কার্যত থাকে না। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “জখম ছাত্রীর অভিভাবকেরা আমাদের কাছে অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।” এই ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন