বাঁকুড়ায় প্রশ্নে শিশু-সুরক্ষা

জেলার কোনও প্রান্তে কোনও শিশুর অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা তার উপরে জেলা সদর থেকে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।

Advertisement

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

উদ্দেশ্য, পাচার, বাল্যবিবাহ এবং শিশুশ্রমের সামাজিক ব্যাধি রোখা। থাকার কথা, শহরাঞ্চলের প্রতি ওয়ার্ডে এবং পঞ্চায়েত স্তরে কয়েকটি গ্রাম নিয়ে। কিন্তু বাঁকুড়া জেলায় এখনও গঠন করা যায়নি দু’শোর বেশি ‘শিশু সুরক্ষা কমিটি’।কারণ হিসাবে পঞ্চায়েত এবং পুরসভা স্তরে প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাবকে দায়ী করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। আবার রাজনৈতিক মতান্তরও রয়েছে কমিটি গড়ে না ওঠার কারণ নিয়ে।

Advertisement

জেলার কোনও প্রান্তে কোনও শিশুর অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা তার উপরে জেলা সদর থেকে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। তাই গ্রাম এবং ওয়ার্ড স্তরে কমিটি গড়ে নজরদারি চালানো হয়। ওই স্তরের কমিটিতে শিশু অধিকার সংক্রান্ত কোনও অভিযোগের নিষ্পত্তি করা না গেলে সেটি ব্লক স্তরের কমিটির কাছে পাঠানো হয়। শিশু সুরক্ষায় গুরুত্ব দিতে ২০১৫ সালে দেশ জুড়ে এই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সোনামুখী এবং বিষ্ণুপুর পুরসভায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ওই কমিটি হয়েছে। কিন্তু বাঁকুড়া পুরসভার কোনও ওয়ার্ডেই কমিটি গড়া যায়নি। তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বিরোধী দলের কাউন্সিলরেরা এখনও প্রস্তাবিত কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা জমা দেননি। ফলে, তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা কমিটির তালিকা জমা দিলেও প্রক্রিয়াটি আটকে গিয়েছে।’’

Advertisement

১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর নীলাদ্রিশেখর ডানা অবশ্য বলছেন, ‘‘এই অভিযোগ মিথ্যা। আমি গত বছরই কমিটিতে যাঁরা থাকবেন তাঁদের তালিকা পুরসভায় জমা দিয়েছি।’’ তবে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রাজু বাউরি বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় আমরা কমিটি গঠন করতে পারিনি। কমিটির সদস্য কারা হবেন সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা খতিয়ে দেখে বিভিন্নস্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সে কাজ করছি। দ্রুত কমিটি গঠন হবে।’’

বাঁকুড়ায় ব্লকের সংখ্যা ২২। একমাত্র কোতুলপুর ব্লকে সব জায়গায় শিশু সুরক্ষা কমিটি গঠন করা গিয়েছে। বাকি ব্লকগুলির অনেক গ্রামেই কমিটি নেই। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার মত, কমিটি গড়ায় পঞ্চায়েত প্রধান উদ্যোগী হলে কাজ অনেক সহজ হয়। তবে তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘এই কমিটিগুলিতে সরকারি অর্থ বরাদ্দ হয় না। কমিটির আর্থিক কোনও লেনদেনও নেই। বিষয়টিকে ভালবাসলে এবং গুরুত্ব দিলেই কমিটি গঠিত হয়। সেখানে ভাল কাজও হয়।’’

গঠিত না হওয়া কমিটির সংখ্যাকে অবশ্য খুব বেশি বলে মানতে নারাজ প্রশাসন। ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার (ডিসিপিও) পার্থসারথি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত এবং পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করে কমিটি গঠনের কাজ দ্রুত শেষ করব। গঠিত হওয়া কমিটিগুলিকে সক্রিয় রাখাও বড় চ্যালঞ্জ। সে কাজেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন