রক্ত পরীক্ষার ডাক খুদেদের

বাবা ভুল করেছিল। তোমরা আর ভুল কর না— থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুরা এমনই বার্তা নিয়ে সচেতনতায় পথে নামল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ০১:১৫
Share:

বিষ্ণুপুরের পথে। নিজস্ব চিত্র

বাবা ভুল করেছিল। তোমরা আর ভুল কর না— থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুরা এমনই বার্তা নিয়ে সচেতনতায় পথে নামল।

Advertisement

মঙ্গলবার বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসে বিষ্ণুপুর শহরে এক পদযাত্রার আয়োজন করেছিল বিষ্ণুপুর থ্যালাসেমিয়া গার্জেন সোসাইটি। সংস্থার সম্পাদক প্রবীর সেন বলেন, ‘‘খুদেরা পথে নেমে সবার কাছে কোনও বিষয়ে বার্তা দিলে তা অনেক বেশি গ্রহণ হয়। সে জন্য এ দিন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছোট্ট ছেলেমেয়েদের নিয়ে পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। সঙ্গে তাদের অবিভাবকেরাও ছিলেন।’’ এ ছাড়া প্ল্যাকর্ড, পোস্টার হাতে নিয়ে পা মিলিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ কর্মী থেকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও।

মিছিলে থাকা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত স্কুল পড়ুয়া সৈকত কোটাল, রিমা ভুঁই, সন্তু নন্দী প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাঁটে। তাদের সঙ্গে পা মেলানো এই রোগে আক্রান্ত তরুণ-তরুণী কিমিতা দে, শেখ কিসমত বলেন, ‘‘সবাই সচেতন হলেই, এই রোগ নির্মুল হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মও রোগের অভিশাপ থেকে বাঁচতে পারবে।’’

Advertisement

সকালে বিষ্ণুপুর ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে পতাকা উত্তোলন করে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার পৃথ্বীশ আকুলি। হাসপাতালের শিশু বিভাগে ফল, মিষ্টি বিতরণ করা হয়। বিকেলে কে এম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রার সূচনা করেন বিষ্ণুপুর মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল।

থ্যালাসেমিয়ার বাহক এক জন হলে বিশেষ ক্ষতি নেই। কিন্তু বাবা-মা দু’জনেই যদিও ওই রোগের বাহক হন, সে ক্ষেত্রে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না, তা পরীক্ষা করাটা জরুরি। এই বার্তা এ দিন পদযাত্রা থেকে দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে কোনও কিছু উপঢৌকনের বিনিময়ে রক্তদান না করারও ডাক দেওয়া হয়েছে। বরং মানুষের পাশে থাকার প্রেরণা থেকেই রক্তদানে আগ্রহী হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে একটি ডে কেয়ার সেন্টার চালু করারও দাবি ওঠে পদযাত্রা থেকে। সেখানেই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের কিছুক্ষণ ভর্তি রেখে ভাল ভাবে রক্ত দেওয়া যাবে। সেই সঙ্গে বিষ্ণুপুরে রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ যন্ত্র চালু করে রক্তের অপচয় রোধ করারও ডাক দেওয়া হয়েছে।

বাঁকুড়ার স্টেশনমোড় এলাকার মুনলাইট ক্লাবের উদ্যোগে ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় সচেতনতা শিবির হয়। ৩৫ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন। বড়জোড়ার অন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এলাকার শিশুদের নিয়ে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতায় র‌্যালির আয়োজন করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন