লুট রুখতে গিয়ে মারে ফাটল মাথা

এর পরে যা যা হয়েছে, তাতে মাথায় পাঁচটি সেলাই পড়েছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। দুষ্কৃতীরা চম্পট দিলেও ব্যাঙ্কের থেকে কিছু লুট হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০১:১৭
Share:

মোহিত পাত্র। —নিজস্ব চিত্র।

রাতে টহল দিতে বেরিয়ে গোবাগের একটি ব্যাঙ্কের সামনে লোহার রড হাতে এক জনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় নিতুড়িয়া থানার সিভিক ভলান্টিয়ার মোহিত পাত্রের। তার পরেই নজরে আসে, ব্যাঙ্কের সদর দরজার তালা ভাঙা। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে জাপটে ধরেছিলেন মোহিত। এর পরে যা যা হয়েছে, তাতে মাথায় পাঁচটি সেলাই পড়েছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। দুষ্কৃতীরা চম্পট দিলেও ব্যাঙ্কের থেকে কিছু লুট হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রাতে টহল দেওয়ার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের মোতায়েন করে প্রায় প্রতিটি থানার পুলিশই। রবিবার রাতে মোহিত পাত্র ও সঞ্জীব বাউড়ি নামে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন ছিলেন গোবাগ মোড়ে। ওই এলাকাতেই রয়েছে একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক।

মোহিত জানান, রাত তখন ১টা পেরিয়েছে। তাঁরা কৃষক বাজারে টহল দিতে দিতে যান ব্যাঙ্কের কাছে। নজরে আসে, সদর দরজার তালা ভাঙা। বাইরে রড নিয়ে দাঁড়িয়ে এক জন। কী হচ্ছে আঁচ করতে পেরেই সটান লোকটিকে জাপটে ধরেছিলেন মোহিত।

Advertisement

ভল্টে আঁচড় পড়তে সাইরেন বেজে ওঠার কথা। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেটির ‘সেন্সর’ কেটে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ভল্টের কাছেই পৌঁছে গিয়েছিল দু’জন। বাইরে চেঁচামিচি শুনে বাইরে বেরিয়ে আসে তারা। মোহিতের দাবি, তিন জন মিলে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় পাশের জঙ্গলে। মোবাইলের ব্যাটারি খুলে ফেলে দিয়ে শুরু হয় মারধর।

সঙ্গে থাকা অন্য সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জীব তত ক্ষণে ফোনে খবর দিয়েছেন নিতুড়িয়া থানায়। মিনিট পনেরোর মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশের দু’টি টহলদারি গাড়ি। বুঝতে পেরে মোহিতকে ফেলে রেখে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের দাবি, মোহিতের সাহসিকতার জন্যই রুখে দেওয়া গিয়েছে বড়সড় ডাকাতি। তবে তাঁর মাথা ফেটেছে দুষ্কৃতীদের মারে। হারমাড্ডি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়েছে।

পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীদের দলটিতে তিন-চারজন ছিল। তাদের মধ্যে একজন পালিয়েছে রামকানালি গ্রামের দিকে। বাকিরা কৃষক বাজারের পাশ দিয়ে পাঞ্চেতের দিকে চম্পট দেয়। ঘণ্টাখানেক ধরে গোটা এলাকায় পুলিশ সন্ধান চালিয়েও কারও নাগাল পায়নি। এ দিকে, ব্যাঙ্কটিতেও কোনও নজরদারি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে সমস্যা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

ব্যাঙ্কটির ম্যানেজার প্রবীর সরকার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা সদর দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ইলেকট্রিকের তার কেটে দিয়েছে। তবে ভল্ট খোলার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন