Cold Wave at Purulia

পুরুলিয়ায় শৈত্যপ্রবাহ, কুয়াশার চাদরে বাঁকুড়া

মকর পরবে এ দিন ভোর থেকে দিনভর কনকনে ঠান্ডা হাওয়া উপেক্ষা করে মানুষজন স্নান সেরেছেন বিভিন্ন নদী-জলাশয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া, পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৫
Share:

সোমবার সকাল ৭টাতেও দৃশ্যমানতা কম। বড়জোড়ার চৌমাথায় যান নিয়ন্ত্রণে ট্র্যাফিক পুলিশ। ছবি: তারাশঙ্কর গুপ্ত

শীতের ঝোড়ো ইনিংসে কাঁপুনি যেন থামছে না পুরুলিয়াবাসীর। আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, সোমবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রি কম। শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় শীতে জবুথবু গোটা জেলার মানুষজনই। গরম চায়ের আড্ডা থেকে সমাজমাধ্যমে ‘শেয়ার’ হওয়া মিম, সর্বত্রই শুধু শীতের চর্চা।

Advertisement

গত শনিবার থেকে জেলায় টানা নেমে চলেছে পারদ। যার প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। বেলা গড়ানোর আগে, রাস্তায় লোকজনের দেখা তেমন মিলছে না। এ দিকে, বিকেল গড়াতে না গড়াতে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল রাস্তাঘাট। সোমবারের ছবিটা তবে ছিল কিছু আলাদা।

মকর পরবে এ দিন ভোর থেকে দিনভর কনকনে ঠান্ডা হাওয়া উপেক্ষা করে মানুষজন স্নান সেরেছেন বিভিন্ন নদী-জলাশয়ে। ঝালদা ১ ব্লকের তুলিনের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব শক্তিপদ মাহাতো ফি বছর এ দিনে স্নান সারেন তুলিনে সুবর্ণরেখার ঘাটে। তিনি বলেন, “মকর সংক্রান্তিতে অন্য বার এতটা ঠান্ডা থাকে না। একেবারে সূর্যোদয়ের মুহূর্তে স্নান করি। কিন্তু গত দু-তিন দিন ধরে এতই ঠান্ডা পড়েছে যে ভোরে স্নান করা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তবে ভোরেই স্নান সেরেছি।”

Advertisement

ওই ব্লকেরই তানাসি গ্রামের বাসিন্দা গীতা গরাঁইয়ের কথায়, “টুসু নিয়ে ভোর ভোর নদীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। এত ঠান্ডা যে হাতপা যেন জমে যাচ্ছিল। তার মধ্যেই স্নান সেরেছি।”

পরব উপলক্ষে জেলাশহর-সহ সর্বত্র ছিল অঘোষিত বন্‌ধের ছবি। বেশির ভাগ রুটে ছিল না বেসরকারি বাস। ট্রেনেও যাত্রিসংখ্যা ছিল হাতেগোনা।

জাহাজপুর কল্যাণ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র জানাচ্ছে, আপাতত শৈত্যপ্রবাহ চলছে পুরুলিয়ায়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে আরও দু’-তিন দিন এমনই পরিস্থিতি থাকতে পারে।

মকর সংক্রান্তিতে দিনভর শীতের দাপট বজায় থাকল বাঁকুড়াতেও। গত বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার তা এক ঝটকায় কমে দাঁড়ায় ৮.৬ ডিগ্রিতে। সে দিনই ছিল মরসুমের শীতলতম দিন। তার পরে তাপমাত্রা ৮ থেকে ৯ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। সোমবারও জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮.৭ ডিগ্রি।

ঠান্ডার পাশাপাশি জেলার বেশির ভাগ জায়গায় এ দিন সকাল থেকে ঘন কুয়াশার জেরে সমস্যায় পড়েন মানুষজন। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাস্তায় যানবাহন খুব ধীরে চলাচল করেছে। বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে দৃশ্যমানতা ছিল বেশ কম। ভোর থেকে সকাল সাড়ে প্রায় ৮টা পর্যন্ত এক হাত দূরের জিনিসকেও ঠাহর করা যায়নি।

বড়জোড়ার সাহারজোড়া থেকে জঙ্গলঘেঁষা রাস্তা ধরে ঘুটগড়িয়ার বিভিন্ন কারখানায় কাজে আসেন বেশ কিছু শ্রমিক। তাঁরা জানান, ওই রাস্তায় হাতি থাকার কারণে রাজ্য সড়ক ধরে বড়জোড়া আসতে হয়েছে। একে হাতির ভয়, তার উপরে ঘন কুয়াশায় জঙ্গলের রাস্তা এড়াতে হচ্ছে। বিষ্ণুপুরেও ঘন কুয়াশায় দৃশ্যমানতা ছিল বেশ কম। বেলা বাড়তে কুয়াশা কেটে রোদের দেখা
মিললেও ঠান্ডার কামড় ছিল ভালই। দক্ষিণ বাঁকুড়ায় কুয়াশা অপেক্ষাকৃত কম ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন