জটে আটকে গেল পুরপ্রধানের গাড়ি, হাঁসফাঁস পুরুলিয়া

সোমবার— সপ্তাহের প্রথম দিন। জেলা সদর শহরের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক রাস্তা ফেঁসে থাকল যানজটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৮
Share:

শহরের কোর্ট রোডের অবস্থা এমন ছিল সপ্তাহের প্রথম দিনে। ছবি: সুজিত মাহাতো

বাড়ি থেকে পুরসভার দূরত্ব মিনিট দশেকের। সোমবার খোদ পুরপ্রধানের সেই পথটাই আসতে লাগল ঝাড়া এক ঘণ্টা।

Advertisement

সোমবার— সপ্তাহের প্রথম দিন। জেলা সদর শহরের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক রাস্তা ফেঁসে থাকল যানজটে। হাসপাতাল মোড়, কোর্ট মোড়, পোস্টঅফিস মোড়, কাপড়গলি আর পিএন ঘোষ স্ট্রিট যেখানটায় মিশছে, হাটের মোড়, বিটি সরকার রোড, বাসস্ট্যান্ড মোড়— যেখান দিয়েই বেরনোর চেষ্টা করেছেন শহরের বাসিন্দারা ঠেকা খেয়ে আবার ফিরে এসেছেন। বেলা যত গড়িয়েছে, পরিস্থিতি হয়েছে আরও খারাপ। এ দিন জেলাশাসকের অফিসের সামনে একটি সংগঠনের অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি ছিল। সেটির সভাপতি জয়দেব মাহাতো বলেন, ‘‘আমাদের জন্য কিছুটা অসুবিধা হয়েছে মানছি, কিন্তু অন্য রাস্তাগুলো আটকাল কেন?’’ একই প্রশ্ন শহরের অনেকের। তাঁদের অভিযোগ, এমন ঝঞ্ঝাট লেগে থাকে প্রায়ই।

কেন? ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ বলছেন, পুরুলিয়া শহরে ফুটপাত নেই বলে। এখানে ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে একসঙ্গে যাতায়াত করে গাড়ি এবং মানুষ। বকুলতলা লেন এলাকার বাসিন্দা সরমা সেন বলেন, ‘‘ফুটপাত না থাকায় বয়স্ক মানুষজনের যে কতটা সমস্যা হয় সেটা আমরাই জানি। সপ্তাহের শুরুটাই যা গেল!’’ আমলাপাড়ার প্রশান্ত রায় বলেন, ‘‘দিন দিন যা হচ্ছে, পুরসভার এ বার কিছু একটা ভাবা দরকার।’’

Advertisement

শহরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। গুরুত্বপূর্ণ মোড় দখল করে বসে যাচ্ছে ঠেলাগাড়ি। কেনাকাটা চলছে রাস্তা উপরেই। হুড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত সেন বা আদ্রার সোমনাথ ঘোষের মতো অনেককেই প্রায়ই সদর শহরে আসতে হয়। জানালেন, যানজটে থমকে থাকার জন্য একটা সময় হাতে নিয়েই বেরোন।

মুশকিলে পড়েন সরকারি কর্মীরাও। সোমবার তেমনই এক জন জানালেন, জেলাশাসকের অফিসের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পরে পুলিশ অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত অফিসে ঢুকতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই সমস্ত কর্মসূচির দিনগুলোয় কেন রাস্তাটা একমুখী করে দেওয়া হয় না?’’

কর্মসূচির দিনগুলিতে যে সমস্যা হয়, সে কথা মানছেন পুরুলিয়ার ডিএসপি (ট্রাফিক) দুর্লভ সরকারও। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ দিনগুলিতে কিছু রাস্তা একমুখী করা যায় কি না সেটা দেখছি।’’ শহরবাসীর একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে পুরসভা কয়েক দিন আগে রাস্তায় নেমেছিল ফুটপাতের দখল হঠানোর জন্য। সেই তৎপরতাতেও ইদানীং ভাটা পড়েছে বলে অভিযোগ। যানজটের ভুক্তভোগী পুরপ্রধান সামিমদাদ খান অবশ্য বলছেন, ‘‘আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে রাস্তার বেআইনি দখল উচ্ছেদ করতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এই ব্যাপারে শহরের বাসিন্দাদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন