বোমাবাজি, পুলিশের উপরেও হামলার নালিশ

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই জেলায় এসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধের জন্য কড়া নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পাত্রসায়রে তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই যে তা কানে তোলেননি, শনিবার মাঝরাতে ইদিলচক গ্রামে দু’পক্ষের বোমাবাজিতে তা সামনে এসে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৯
Share:

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই জেলায় এসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধের জন্য কড়া নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পাত্রসায়রে তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই যে তা কানে তোলেননি, শনিবার মাঝরাতে ইদিলচক গ্রামে দু’পক্ষের বোমাবাজিতে তা সামনে এসে গেল। পুলিশ গেলে দু’পক্ষ তাদের উপরেও হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ১১ জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায় ও এই ব্লকের তৃণমূল নেতা তথা পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পার্থপ্রতিম সিংহ ওরফে বাবলুর দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। দুই নেতার দ্বন্দ্বের জেরে তাঁদের অনুগামীদের মধ্যে অশান্তি লেগেই রয়েছে। দলের একটি সূত্রের খবর, বাবলুবাবু এতদিন সোনামুখীর প্রাক্তন বিধায়ক দীপালি সাহার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে দীপালিদেবীর হার এবং মাসখানেক পরে ফের স্নেহেশবাবুই ব্লক তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যান বাবলুবাবু। এ দিকে স্নেহেশবাবুও গোটা ব্লক জুড়ে সংগঠন গড়ে তুলতে তৎপর হয়েছেন।

এ নিয়ে দু’পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে ছোটখাটো গোলমাল চলছিলই। শনিবার তাই বড় আকার নেয়। বাবলুবাবুর অভিযোগ, ওই দিন দুপুরে স্নেহেশবাবুর লোকজন খয়েরবনিতে পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সেখ জুলফিকার ভুট্টোর বাড়িতে হামলা চালিয়ে বোমাবাজি করে। বাড়িতে না থাকায় ওই নেতা রক্ষা পান। যদিও স্নেহেশবাবুর পাল্টা দাবি, বাবলুবাবুর অনুগামী জুলফিকার ভুট্টো ও কয়েকজন তৃণমূল নেতা পরিকল্পনা করে সোনামুখীর দুবরাজপুর এলাকা থেকে কিছু আসামাজিক লোকজনকে বিকেলে বলরামপুর ও খয়েরবনিতে নিয়ে আসে। রাতে ওই দুষ্কৃতীদের নিয়ে ইদিলচক গ্রামে তৃণমূল কর্মীদের উপর তারা হামলা চালায়। তারা বোমাবাজি করে এবং এলাকার এক তৃণমূল কর্মীর খড়ের পালুইয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।

Advertisement

হামলার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী রাতে ইঁদিলচকে গেলে পুলিশের গাড়ির উপর হামলা ও পুলিশ কর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। তবে পুলিশের ভয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই দুষ্কৃতীরা গ্রাম ছাড়ে। তবে দু’পক্ষের নেতারা নিজেদের অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মানতে চাননি। থানাতেও তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেননি। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা রুজু করে দু’পক্ষের এগারো জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হয়।

রবিবার স্নেহেশবাবু দাবি করেন, ‘‘ওই এলাকায় আমার সমর্থন বেশি বলেই বাবলুর লোকজন ছক কষে এই হামলা চালালো। দলকে গোটা ঘটনা লিখিত ভাবে জানাচ্ছি।” অন্যদিকে, বাবলুবাবুর পাল্টা দাবি, “প্রশাসনিক কাজ বা দলীয় কাজ সব কিছুতেই স্নেহেশ আমাদের ব্রাত্য করে রাখছে। আমাদের লোকজনও এলাকায় থাকতে পারছেন না” পাত্রসায়রের দ্বন্দ্ব কি থামবে না? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “এটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা। এলাকার কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন