পরপর অনুপস্থিত সাক্ষীরা, বাদানুবাদ দুই আইনজীবীর

সমন নিয়েছিলেন সকলেই। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে নির্ধারিত দিনে সাক্ষ্য দিতে আসেননি অনেকেই। বদলে পৌঁছেছে তাঁদের অসুস্থতার সার্টিফিকেট। নতুন করে সমন পাঠানো হলেও সেই ছবি বদলায়নি চলতি মাসেও! কেন ঠিক সাক্ষ্য দেওয়ার দিনেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা? মঙ্গলবার এ নিয়ে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী ও সাগর ঘোষ পরিবারের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয় সিউড়ি জেলা জজ গৌতম সেনগুপ্তের এজলাসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৫
Share:

সমন নিয়েছিলেন সকলেই। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে নির্ধারিত দিনে সাক্ষ্য দিতে আসেননি অনেকেই। বদলে পৌঁছেছে তাঁদের অসুস্থতার সার্টিফিকেট। নতুন করে সমন পাঠানো হলেও সেই ছবি বদলায়নি চলতি মাসেও!

Advertisement

কেন ঠিক সাক্ষ্য দেওয়ার দিনেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা? মঙ্গলবার এ নিয়ে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী ও সাগর ঘোষ পরিবারের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয় সিউড়ি জেলা জজ গৌতম সেনগুপ্তের এজলাসে। এমনও প্রস্তাব দেওয়া হয়, কমিশন গঠন করে শারীরিক অসুস্থতা কতটা, তা খতিয়ে দেখা হোক। প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হোক। যে সব চিকিৎসকেরা সাক্ষীদের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ইস্যু করেছেন, প্রয়োজনে তাঁদের তলব করুক আদালত। শুধুমাত্র সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে অভিযুক্তেরা বিনা বিচারে দিনের পর দিন কারাগারে থাকতে পারেন না। সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মঙ্গলবার বিচারক কোনও নির্দেশ না দিলেও, বুধবার যেহেতু দ্বিতীয় পর্বের সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ দিন। তখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” আইনজীবী মহলের মত, পরিস্থিতি না বদলালে সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় কড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে জেলা আদালত।

ঘটনা হল, সোমবার সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী সরস্বতী ঘোষ এবং পুত্রবধু শিবানী ঘোষের সাক্ষ্যদানের দিন ধার্য করেছিল জেলা আদালত। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে উভয়েই অনুপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার, সাক্ষ্য দেবার কথা থাকলেও সেই শারীকির অসুস্থতার জন্য সাক্ষ্যদানে অনুপস্থিত থাকলেন নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষ। এ দিন অনুপস্থিত ছিলেন আরেক সাক্ষী কসবা পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্করী দাসও।

Advertisement

প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, খুন হন পাড়ুইয়ের বাঁধ নবগ্রামের বাসিন্দা সাগর ঘোষ। ওই খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীর মতো তৃণমূল নেতার। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত ওই হত্যা মামলার দায়িত্ব পায় বিশেষ তদন্তকারি দল (সিট)। গত ১৬ জুলাইয়ে আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিট। গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাক্ষ্যদানের দিন ধার্য হয়েছিল। কিন্তু, মামলার মোট ৫২ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১৩ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়েছিল। সমন নিয়েও নিহতের পরিজন সাক্ষ্য দিতে আসেননি। এমনকী অনুপস্থিত সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও পরিস্থিতি বাদলায়নি। এর পরেই কোন কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিতে চান সরকারি আইনজীবী, আবেদন ক্রমে ২৩ থেকে ২৫ মার্চ সাক্ষ্যদানের দিন ধার্য করে আদালত। তবে, দু’দিন কেউ এলেন না। হৃদয়বাবু এ দিন বলেন, “অসুস্থ থাকার জন্যই আদালতে হাজির থাকা সম্ভব হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন