West Bengal Panchayat Election 2023

বুথে হারলে এলাকায় উন্নয়ন নয়, তৃণমূল নেতার হুঁশিয়ারিতে বিতর্ক

শাসকদলের নেতার হুঁশয়ারি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। যদিও এটা বিদায়ী উপপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত’ মন্তব্য বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৬:৩৪
Share:

দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে তৃণমূল নেতা নারায়ণ ভাণ্ডারী। —নিজস্ব চিত্র।

বুথে হেরে গেলে পঞ্চায়েতের কোনও উন্নয়ন ভোটারেরা পাবেন না, তাই তৃণমূলের প্রার্থীকে জেতাতে হবে। এমনই মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন বোলপুরের কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান ও এলাকার তৃণমূল নেতা নারায়ণ ভান্ডারি।

Advertisement

শাসকদলের নেতার এ হেন হুঁশয়ারি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। যদিও এটা বিদায়ী উপপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত’ মন্তব্য বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। অন্য দিকে, ভোটের সময় বিজেপি নেতারা ভুল পথে পরিচালনা করতে এলে, তাঁদের ‘ধরে রেখে, ঝেঁটিয়ে বিদায়’ করার নিদান দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতা কাজল শেখ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কসবা পঞ্চায়েত এলাকায় একটি নির্বাচনী প্রচারে এসে নারায়ণ ভান্ডারী বলেন, “কসবা পঞ্চায়েতের ১৫টি আসনের মধ্যে ইতিমধ্যে আমরা ৯টি আসনে জিতে আছি। প্রধান উপপ্রধান তৈরির জন্য আমাদের আর কোনও সদস্য লাগবে না। ৬টি আসনে নির্বাচন হবে। যদি আপনারা এই ৬টি বুথকে হারিয়ে দেন, তা হলে সেই সেই বুথে কিন্তু কোনও ধরনের উন্নয়নের কাজ হবে না। পঞ্চায়েতে এসে দরবার করলেও কোনও লাভ হবে না! ” এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার মুখে পড়ে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। বুধবার তিনি বলেন, “আমি বলতে চেয়েছি, উন্নয়ন নিশ্চয়ই হবে। তবে যে-সব বিরোধী প্রার্থী আছেন, তাঁরা এলাকার উন্নয়নে শামিল হবেন না। তাঁদের মধ্যে কেউ জিতে গেলে আর আসবেন না। স্বাভাবিক ভাবেই উন্নয়ন ব্যাহত হবে।”

Advertisement

বিরোধীদের বক্তব্য, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, রং না দেখে দলমত নির্বিশেষে উন্নয়নের কাজ করে তৃণমূল সরকার। কিন্তু, তাঁর বক্তব্যকে নস্যাৎ করছেন তাঁরই দলের নেতা! বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘এটাই তো তৃণমূলের সংস্কৃতি! যে সমস্ত এলাকায় লড়াই হচ্ছে, সেখানে তারা ভয় দেখিয়ে, জোর করে ভোটে জিততে চাইছে। এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ” বিদায়ী জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “উনি (নারায়ণ) কী বলেছেন, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি জেনে বলতে হবে। ”

বিকাশ এ কথা বললেও বুধবার সিঙ্গি অঞ্চলে‌ প্রচারে এসে কাজল শেখ বলেন, ‘‘এটা ওঁর ব্যক্তিগত মত। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও এলাকাকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাখেননি। এ ক্ষেত্রেও কোনও এলাকা উন্নয়ন-বঞ্চিত হবে না।’’

সিঙ্গির প্রচারেই বিজেপিকে নিশানা করে কাজল বলেন, “আমাদের বিরোধী বিজেপি। তারা ভোটের বাজনা যখন বাজে, তখন আসে। এখনও পর্যন্ত তারা ভোট চাইতে আসেনি। তবে আসবে। তারা রাতের অন্ধকারে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকা দেবে। আদিবাসী ভাইদের নেশার জিনিস দেবে, তাদেরকে ভুল পথে পরিচালিত করবে। তাই মা-বোনেদের বলব, তাদেরকে ধরে রাখবেন। যদি ধরতে পারেন হয় ঝেঁটিয়ে বিদায় করবেন, নাহলে আমাদেরকে খবর দেবেন।” কাজলের এই বক্তব্য নিয়ে এ দিন তৃণমূলের কেউ মুখ খুলতে চাননি। সন্ন্যাসীচরণের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের প্রার্থীরা যাতে ভোটের প্রচার করতে না-পারেন, তার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে জানাব। ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন