ফাইল চিত্র।
করোনা মোকাবিলায় আপাতত বাইরে থেকে আসা মানুষদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রেখে কড়া পর্যবেক্ষণের পথেই হাঁটতে চাইছে বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে ‘আইসোলেশন’-এ কাউকে রাখা হয়নি। সরকারি ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’-এও নেই কেউ। তবে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন বিদেশ থেকে আসা ১৯ জন ও ভিন্ রাজ্য থেকে আসা জেলার ১,৯৬০ জন বাসিন্দা।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন এ দিন বলেন, “বিদেশ বা ভিন্ রাজ্য থেকে ঘুরে আসা মানুষদের ‘স্ক্রিনিং’ করে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত তাঁদের স্বাস্থ্যের খবর রাখছি আমরা। আপাতত আইসোলেশন বা সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে কেউ নেই।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও বাঁকুড়া পুরসভার তরফে বাইরে থেকে আসা সব মানুষজনকেই স্বাস্থ্যপরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বাঁকুড়া শহর-সহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচারও চালানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যাতে কোনও রকম গুজবে কান না দেন, তা নিয়েও বার্তা দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। যদিও বাইরে থেকে আসা মানুষজনকে নিয়ে গুঞ্জন চলছেই। সদ্য বেনারস ঘুরে এসেছেন বাঁকুড়ার জুনবেদিয়ার এক মাঝবয়সি মহিলা। সেখান থেকে ফিরে তিনি জ্বরে পড়েন। তাঁকে নিয়ে এলাকায় জল্পনা বাড়ে। ঘটনাটি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কানে গেলে স্বাস্থ্য দল জুনবেদিয়ায় গিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখেন। তাঁকে ১৪ দিন ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শ্যামলবাবু বলেন, “নানা ধরনের গুজব সমাজমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। মানুষ যেন এ সবে বিভ্রান্ত না হন, আমরা তা নিয়ে সতর্ক করছি। বাইরে থেকে কেউ আসলেই করোনা আক্রান্ত এমন সন্দেহ করার কোনও কারণ নেই। তবে সচেতন থাকতে হবে।” বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তও বলেন, “সমস্ত কাউন্সিলরদের নিজেদের এলাকার উপরে নজর রাখতে বলেছি। বাইরে থেকে আসা কোনও ব্যক্তিকে কেউ হেনস্থা করলে যাতে দ্রুত আমাদের খবর দেওয়া হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’
তবে অনেকেরই প্রশ্ন, ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা ব্যক্তিরা বাইরে ঘোরাফেরা করলে কী ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শ্যামলবাবু বলেন, “হোম কোয়রান্টিনে থাকা ব্যক্তিদের তথ্য স্থানীয় থানায় দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ তাঁদের উপরে নজর রাখছে। কেউ নিয়ম ভাঙছেন জানা গেলে তাঁকে সরকারি কোয়রান্টিনে নিয়ে এসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”