Coronavirus in West Bengal

কন্টেনমেন্ট এলাকায় যেন বন্দিমুক্তির আনন্দ

সোমবার থেকে শুরু হওয়া পঞ্চম দফা লকডাউন শুধু কন্টেনমেন্ট জোনে চলবে সেটা স্পষ্ট করেছে কেন্দ্র ও রাজ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ০৬:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

দেখলে মনে হবে করোনা বিদায় নিয়েছে। রাস্তায় গিজগিজ করছে লোকজন, যানবাহন, হাটেবাজারে হইচই কর্মব্যস্ততা। বড়দের দেখাদেখি রাস্তায় খুদেরাও। খেলায় মেতেছে তারা। টানা দু’মাস পরে লকডাউনের বন্দিদশা কাটিয়ে যেন মুক্তির আনন্দ। গোটা জেলা জুড়ে একই ছবি। ব্যতিক্রম নয় নিষেধাজ্ঞায় থাকা জেলার কন্টেনমেন্ট জোনগুলিও।

Advertisement

সোমবার থেকে শুরু হওয়া পঞ্চম দফা লকডাউন শুধু কন্টেনমেন্ট জোনে চলবে সেটা স্পষ্ট করেছে কেন্দ্র ও রাজ্য। বলা হয়েছে, কন্টেনমেন্ট জোনের ভিতরে কেবলমাত্র আপৎকালীন পরিষেবাই চালু থাকবে। বাকি সব গতি-বিধি বন্ধ। কিন্তু, বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংক্রমিত রাজ্য থেকে জেলায় ফিরেছেন যাঁরা, দিন কয়েক আগে পর্যন্ত তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহের পরে বাড়িতে নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছিল। যাঁদের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁদের এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোভিড আক্রান্তদের এলাকা ধরে মোট ৫৫টি কন্টেনমেন্ট জোন চিহ্নিত হয়েছে।

এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে আক্রান্তদের ওই এলাকায় ঢোকার ব্যাপারে বিধিনিষেধ জরুরি। ওই এলাকাকে ঘিরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সহ নানা পদক্ষেপ করার কথা। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তারা বলছেন, ‘‘যাঁরা নিষেধাজ্ঞা মানবেন না, অতিমারীর আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কিন্তু, সচেতনতার অভাবে কন্টেনমেন্ট জোনে থাকা নিষেধাজ্ঞা সকলে মেনে চলছেন না, সেটা আড়ালে মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

Advertisement

রবিবার মুরারই ১ ব্লকের চাতরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামে এক দম্পতি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে পাড়ুইয়ের কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বোলপুরের বাহিরী পাঁচশোয়া গ্রামে পঞ্চায়েতের দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন শনিবার। রবিবার সদাইপুর থানা এলাকার পারুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দার করোনা ধরা পড়ে। ৩১ মে পর্যন্ত জেলা জুড়ে লকডাউন চলাকালীন বা সোমবার শুধু কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত সেই এলাকাগুলিতেও স্বাভাবিক কাজ কর্ম চলেছে। বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না কেউ-ই।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সব সময় জোর প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। সচেতন হতে হবে মানুষকেই। করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে সচেতন না হয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ বরং ব্যস্ত কী ভাবে তাঁদের এলাকায় কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলা রোখা যায়। এটা হতাশার।’’ প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ বলছেন, ‘‘প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত প্রায় সকলেই পরিযায়ী। গত এক মাসে ত্রিশ হাজারের বেশি শ্রমিক জেলায় ফিরেছেন। অপরিকল্পিত ভাবে এত সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফিরলে তাঁদের উপরে নজরদারি করা, তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস বা বাড়িতে নিভৃতবাসে পাঠানো। লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করানোর কাজটা মোটেও সহজ নয়।’’

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস গড়া নিয়ে আপত্তি। পুলিশ ও প্রশাসন দিন রাত এক করে খাটছে। কিন্তু এলাকার মানুষকেও প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। কারণ, করোনা বিদায় নেয়নি। সচেতন না হলে সেটা ক্রমশ বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন