প্রথম জন্মদিনে হোমে গিয়ে কেক কাটল একরত্তি খুশি

ছোট মেয়ের প্রথম জন্মদিনটা অন্য ভাবে পালন করবেন বলে আগাম ভেবে রেখেছিলেন ব্যাবসায়ী নিখিলেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী সরস্বতীদেবী। কয়েক দিন আগে এই ব্যাপারে কথা বলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মধুসূদন দাসের সঙ্গে।

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

আদ্রা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

সবাই মিলে: মণিপুর গ্রামের হোমে জন্মদিনের অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র

গত বছর প্রথম দিনটাতেই তাঁদের সংসারে এসেছিল প্রথম সন্তান। ফুটফুটে সেই একরত্তি মেয়ে পা দিল এক বছরে। সেই আনন্দ ভাগ করে নিতে কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত পরিবারের শিশু ও অনাথ শিশুদের সঙ্গে দিনটা হোমে কাটালেন দম্পতি। সোমবার আদ্রার মণিপুর গ্রামের অরুণোদয় শিশু নিকেতনে ছোট মেয়ে এক বছরের খুশিকে নিয়ে এসেছিলেন আদ্রার পাঁচুডাঙার নিখিলেশ মাজি ও সরস্বতী মাজি। হোমেই জন্মদিনের কেক কাটা হল। আবাসিকদের দিলেন মিষ্টি, কেক, চানাচুরের প্যাকেট। বছরের প্রথম দিনটা আনন্দে কাটাল ছোট ছোট আবাসিকেরাও। হোমের সম্পাদক নবকুমার দাস জানান, ওই দম্পতির এই কাজে তাঁরা অভিভূত।

Advertisement

ছোট মেয়ের প্রথম জন্মদিনটা অন্য ভাবে পালন করবেন বলে আগাম ভেবে রেখেছিলেন ব্যাবসায়ী নিখিলেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী সরস্বতীদেবী। কয়েক দিন আগে এই ব্যাপারে কথা বলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মধুসূদন দাসের সঙ্গে। মধুসূদনবাবু বলেন, ‘‘নিখিলেশবাবুর কাছে প্রস্তাব শুনেই হোমের সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ছোট একটা অনুষ্ঠান যাতে করা যায় সে জন্য অনুরোধ করেছিলাম।”

সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ দম্পতি মেয়েকে নিয়ে মণিপুরের অরুণোদয় শিশু নিকেতন হোমে পৌঁছন। আবাসিকদের নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন নবকুমারবাবুরা। শুরু হয় অনুষ্ঠান। হোমের প্রায় আড়াইশো আবাসিকের হাতে কেক আর মিষ্টির প্যাকেট দিয়েছেন ওই দম্পতি। নিখিলেশবাবু বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম, সেই খরচে যে ছেলে মেয়েগুলো বাবা মা-র স্নেহ সে ভাবে পায় না, তাদের মুখে হাসি ফোটাবো।’’ সরস্বতীদেবী বলেন, ‘‘সমাজের দুঃস্থ, অবহেলিত মানুষজনের পাশে মেয়ে যাতে বড় হয়ে থাকে আমরা সেটাই চাই। বড় হলেও জন্মদিনে ওকে এখানে নিয়ে আসব।’’

Advertisement

এখনও কুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। অনেকেই কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, এমনকী তাদের পরিবারের লোকজনকে অন্য চোখে দেখেন। সেই প্রেক্ষিতে এক দম্পতির কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত পরিবারের শিশুদের সঙ্গে ছোট মেয়েকে নিয়ে সারা দিন কাটানোয় সমাজের কাছে একটি ভাল বার্তা যাবে বলে মনে করেন হোমের সম্পাদক নবকুমার দাস। তিনি বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠান একটা নজির হয়ে থাকবে। এই ধরনের কিছু হোমে আগে হয়নি।’’

নিখিলেশবাবুর মেয়েকে জন্মদিনে সাধ্যমত উপহার দেওয়া হয়েছে হোমের তরফেও। আর আবাসিকরা জন্মদিনে মেতেছিল নাচে গানে। পঞ্চায়েত প্রধান মধুসূদনবাবু বলেন, ‘‘নিখিলেশবাবুর থেকে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আশা করি। বছরের প্রথম দিনের আনন্দটা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে এই অনুষ্ঠান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন