ওসিকে ভর্ৎসনা কোর্টের

বধূ নির্যাতনের একটি মামলায় তদন্তকারী কাঁকরতলা থানার ওসি-কে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু বারবার সেই সমন অমান্য করেন কাঁকরতলা থানার ওসি পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৮
Share:

হাজিরা: উর্দিতে ওসি। নিজস্ব চিত্র

বধূ নির্যাতনের একটি মামলায় তদন্তকারী কাঁকরতলা থানার ওসি-কে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু বারবার সেই সমন অমান্য করেন কাঁকরতলা থানার ওসি পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। পুলিশের
উর্দি না পরে আদালতে আসার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

কিন্তু সেই নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন না করায় বৃহস্পতিবার সিউড়ি আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন পার্থসারথিবাবু। নির্দেশ অমান্য করে উর্দিতে আদালতে হাজিরা এবং ওই মামলার বিষয়ে জেলা পুলিশকর্তার পাঠানো চিঠিতে ক্রুটি থাকায় ১৮ সেপ্টেম্বর ফের তাঁকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিলেন সিউড়ির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (চতুর্থ) কল্লোল দাস।

আইনজীবীরা জানান, ২০১২ সালে দুবরাজপুর থানায় দায়ের হওয়া একটি বধূ নির্যাতনের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ওই এজলাসে। মামলার তদন্তকারী আধিকারিক ছিলেন পার্থবাবু। কিন্তু বার বার আদালত সমন পাঠালেও গরহাজির ছিলেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয় আদালত। সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়ে গেলেও শুধুমাত্র তাঁর অনুপস্থিতির জন্য কেন মামলা ঝুলে থাকবে, সেই প্রশ্ন তুলে কাঁকরতলা থানার ওসির বিরুদ্ধে আগে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। কিন্তু তার পরেও আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় কয়েক দিন আগে জামিনঅযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। জেলা পুলিশ সুপারকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, উর্দিতে নয়, ওই আধিকারিককে যেন সাদা পোশাকে হাজির করানো হয়।

Advertisement

কিন্তু এ দিন উর্দিতে পার্থবাবু এজলাসে ঢুকতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারক। তিনি পুলিশ আধিকারিককে বলেন, ‘‘ব্যাজ খুলে আসুন। আমি আপনাকে কাস্টডিতে নেব।’’ আইশৃঙ্খলা জনিত কারণে ওসি এত দিন আদালতে আসতে পারেননি বলে জানান তাঁর আইনজীবীরা। বিচারক জানান, বিকেলে তিনি মামলাটি শুনবেন। ফের মামলার শুনানি শুরু হওয়ার পরে কেন ওই পুলিশ আধিকারিক তিন বার সমন পেয়েও হাজিরা দেননি, তা নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের তরফে পাঠানো চিঠিতে ত্রুটি দেখে ফের ক্ষুব্ধ হন বিচারক।

মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, সাদা পোশাকে আদালতে আসতে বলা হয়েছিল ওসিকে। আইনশৃঙ্খলা জনিত দায়িত্বে ব্যস্ত থাকায় ওসি হাজির হতে পারেননি, সে জন্য তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে— পুলিশ সুপারের তরফে এমন একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছিল আদালতে। কিন্তু চিঠিতে যে আধিকারিক স্বাক্ষর করেন, তাঁর কোনও রাবার স্ট্যাম্প বা পদমর্যাদার উল্লেখ না থাকায় ক্ষুব্ধ হয় আদালত।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘চিঠির ভুল নিয়ে আদালত কী বলেছে জানা নেই। ফের হাজিরার জন্য এক দিন ধার্য করা হয়েছে।’’ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি পার্থসারথিবাবু। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, ওই দিন তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন