সভার একফাঁকে চোখ বুলিয়ে নেওয়া। ছবি:অনির্বাণ সেন।
তৃণমূলের মন্ত্রিসভার মিটিং এ বার জেলেই হবে। সাম্প্রতিক রোজ ভ্যালি-কাণ্ডে অস্বস্তিতে পড়া শাসকদলকেই এ ভাবেই বিঁধলেন কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার। শনিবার মহম্মদবাজারে জেলার ৩২তম কৃষক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেন তিনি। অমলবাবু বলেন, ‘‘সারদা তো দেখলাম। এখন রোজ ভ্যালি। ইতিমধ্যে রোজ ভ্যালি কাণ্ডে তৃণমূলের দুই সাংসদ জেলে। শোনা যাচ্ছে কয়েক জন মন্ত্রীর নামও নাকি এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। এই হারে মন্ত্রী-সাংসদ জেলে ঢুকলে তো এ বার জেলের মধ্যেই মন্ত্রিসভার মিটিং হবে!’’
এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ মহম্মদবাজার কমিউনিটি হলের সামনে সংগঠনের পতাকা তুলে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কৃষকসভার জেলা সভাপতি মনসা হাঁসদা। শহিদ বেদীতে মাল্যদান শেষে নেতা-কর্মীরা মিছিল করে স্থানীয় কালীতলার মাঠে জমা হন। ওই সমাবেশেই অমলবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তুষার ঘোষ, রাজ্য নেতৃত্ব আব্দুর রেজ্জাক মণ্ডল, কৃষকসভার জেলা সম্পাদক আনন্দ ভট্টাচার্য এবং দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়, ধীরেন লেট, ধীরেন বাগদি-সহ অন্যান্য বাম নেতৃত্ব। নিজের বক্তৃতায় তুষারবাবুর অভিযোগ, ‘‘২০১৪ সালে এই মহম্মদবাজারেই পুলিশের মদতে গণতন্ত্রের হয়ে প্রতিবাদকারীরা মার খেয়েছিলেন।’’ তাঁর দাবি, ১৯৮০ সালে চাষিরা ১০ বস্তা ধান বিক্রি করে ১০ গ্রাম সোনা কিনতে পারতেন। কিন্তু এখন ৫০ বস্তা ধান বিক্রি করেও ১ ভরি সোনা কেনা যায় না। সে স্মরণ করিয়ে তাঁর হুঙ্কার, ‘‘বীরভূমের এই মাটি লাল ঝান্ডার মাটি ছিল। আবার লাল ঝান্ডারই হবে।’’
অন্য দিকে, আনন্দবাবু জানান, ১৯৪৯ সালে মহম্মদবাজারের দামড়ার লড়াইয়ে পাঁচ আদিবাসী শহিদ হয়েছিলেন। আবার ১৯৭৯ সালে মালডিহিতে চাষিদের বাঁচাতে গিয়ে নেপাল দাস এবং মালতী দাস শহিদ হয়েছিলেন। ‘‘অতীতের সেই শহিদদের সম্মানেই এ বারের জেলা সম্মেলনের জন্য মহম্মদবাজারকে বেছে নেওয়া হয়েছে,’’—বলছেন তিনি। এ দিন রাজ্য সরকারের দুর্নীতির পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের নিটো বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন অমলবাবুরা। বাম নেতৃত্বের দাবি, এ দিনের সমাবেশে আট হাজারেরও বেশি মানুষ জমায়েত করেছেন। এ বার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে কৃষকসভার রাজ্য সম্মেলন হবে।